বোলপুর অগ্নিকাণ্ডে মৃত আরও ১, নেপথ্যে জায়ের বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক?
এই সময় | ০৬ জুলাই ২০২৪
বোলপুরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ছক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়েছিল গোটা রাজ্যে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে আব্দুল আলিম, কেরিমা বেগম এবং তাঁর ছোট ছেলে আয়ান শেখের। ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।সূত্রের খবর, এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে আব্দুল আলিমের সেজ বউদিকে। প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দাদের সন্দেহ, আব্দুল আলিমের সেজ বউদি নাজনি নীহারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এলাকার এক হাতুড়ে চিকিৎসক চন্দন ইসলামের। সেই বিষয়েই জানতে পেরে যান আব্দুল আলিমের স্ত্রী। এই সম্পর্কের বিষয়ে যাতে বাইরের কেউ জানতে না পারেন সেই কারণেই নাজনি এবং ওই চিকিৎসক এই কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
পাশাপাশি শনিবার ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা রয়েছে ফরেন্সিক দলের। শুক্রবারই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল কেরিমা বেগম এবং তাঁর ছোট ছেলে আয়ান শেখের। বর্ধমানে একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন আব্দুল আলিম। শনিবার তাঁরও মৃত্যু হয়েছে।
আব্দুল আলিমের বড় ছেলে রাজের দাবি, ঘটনায় নাজনিকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু, পলাতক ওই চিকিৎসক। রাজ বলেন, ‘বাবা, মা, ভাই পাশের কামরায় শুয়েছিল। সেই সময়ই কেউ ওদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি ওরা জ্বলছে। কান্না জড়ানো গলায় বলেন তিনি।’ বাবা, মা এবং ভাইয়ের হত্যাকারীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি করছেন রাজ।
এই ঘটনায় কেরিমার ভাই শেখ আবদুল্লাহর অভিযোগ সরাসরি আব্দুল আলিমের সেজ বউদির দিকে। তাঁর দাবি, 'স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েছিলেন জানাইবাবুর সেজ বউদি। আমার বোন তা দেখে নেয়। এই সম্পর্কের কথা যাতে পাঁচকান না হয় সেই জন্য বোন, জামাইবাবু এবং চার বছরের ভাগ্নেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। দোষীদের শাস্তির দাবি করছি।'
আব্দুল আলিমের পরিবারের সদস্যদের দাবি, তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন শর্ট সার্কিটের থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, বাড়ির ওই কামরার সুইচবোর্ড থেকে শুরু করে এসি, কোনও কিছু পোড়ার বিষয়টি নজরে আসেনি।
এরপরেই তাঁদের সন্দেহ হয়। পাশাপাশি তিনজনের দেহ থেকেই কেরোসিন তেলের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি কেরোসিনের জারিকেন উদ্ধার হয় বলেও দাবি করেছিলেন পরিজনরা। এরপরেই তদন্তে নামে পুলিশ। কে বা কারা এই গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এই প্রসঙ্গে বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'কতজন আটক হয়েছে সেই সংখ্যাটা এখনই বলা সম্ভব নয় তদন্তের স্বার্থে। আটক যারা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।'