দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তার গ্রাসে জাতীয় সড়ক অনেক জায়গায় ধসে গিয়েছে। গত বছর অক্টোবরের হরপা বানের জেরে জাতীয় সড়ক ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফের এবার জাতীয় সড়ক ধসে একাধিক জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদেরও। এক ধাক্কায় অনেকটাই বুকিং বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হতেই আশঙ্কায় রয়েছেন উত্তরের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এবছর জুন মাসের শুরু থেকে টানা বৃষ্টিতে দফায় দফায় ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কালিম্পং, সিকিমের অংশে নানা জায়গায় জাতীয় সড়ক ধসে যাওয়ায় যাতায়ত বন্ধ। বাংলা সিকিম যোগাযোগের একমাত্র লাইফ লাইন এই জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ছে উত্তরের পর্যটনেও।
জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কে ধস ও বিকল্প রুটে সময় বেশি লাগায় অনেকেই ট্যুর বাতিল করছেন। এই জুন মাসেই পর্যটনে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জুলাই মাসে এই ক্ষতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের প্রধান রাস্তা চালু রয়েছে। সেক্ষেত্রে দার্জিলিঙের পর্যটনের ক্ষেত্রে সেরকম বড়ো প্রভাব এখনও পড়েনি বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বর্ষার কারণে কিছুটা কম রয়েছে পর্যটকদের সংখ্যা। গত ২৩ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ বার বন্ধ রাখতে হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কালিম্পং হয়ে সিকিম যাতায়াতের বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে হচ্ছে। সমস্যা বাড়ছে পর্যটকদের।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাহাড়ের পর্যটন ব্যাপকভাবে ধাক্কা খেয়েছে। এই ক্ষতির প্রভাব পুজো পর্যন্ত থাকবে। যা হিসেব তাতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জুন মাসে যেখানে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ বুকিং ভর্তি থাকে। সেখানে বুকিং নেমে এসেছে তা ১৫ থেকে ২০ শতাংশে এসে দাড়িয়েছে। জুলাই মাসে বর্ষার কারণে এমনিতেই বুকিং কমে ৬০ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু জাতীয় সড়কের কারণে তা নেমে এসেছে ৭ থেকে ১০ শতাংশে।’ জাতীয় সড়ক আগামীতেও এই হালে থাকলে তাতে আরও ক্ষতি বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।
পাশাপাশি গাড়ি চালকেরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এক গাড়ির চালক বলেন, ‘জুন-জুলাই মাসে পর্যটকদের সংখ্যা কম থাকে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় ঘুরপথে যেতে অনেকেই ঝুঁকি নিচ্ছেন না। গাড়ি ভাড়াও আমাদের বেশি নিতে হচ্ছে। ফলত, বুকিং অনেকটাই কম আসছে।’