এই সময়, শিলিগুড়ি: চার মাসে ১১ বার বন্ধ হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। কখনও ধস নামায়, আবার কখনও অতিবৃষ্টিতে তিস্তা নদীর জলে জাতীয় সড়ক প্লাবিত হওয়ায় সিকিমগামী এই সড়কটি যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন, পর্যটক ও নিত্যযাত্রী — সবার কাছে। মূলত কালীঝোরা থেকে মেল্লি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রাস্তার ভয়াবহ পরিস্থিতি।বৃষ্টি হলেই ওই এলাকার রবিঝোরা, লিকুবির, ২৯ মাইল, গেইলখোলায় ধস নামছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। রাস্তা সাময়িক মেরামত করে যান চলাচল চালু করার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার বন্ধ রাখতে হচ্ছে। গত ২৩ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ১১ বার বন্ধ রাখতে হয়েছে জাতীয় সড়ক। কালিম্পং হয়ে সিকিম যাতায়াতের বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে হচ্ছে।
জাতীয় সড়কের দু’পাশে একের পর এক সরকারি প্রকল্পের কাজ চলার ফলেই সিকিম যাতায়াতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির এমন হাল বলে মনে করা হচ্ছে। জাতীয় সড়কের একেবারে গাঁ-ঘেঁষে তিস্তা নদীতে জাতীয় জলবিদ্যুৎ নিগমের একের পর এক প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে, তৈরি হচ্ছে সিকিমগামী রেল প্রকল্প। গত অক্টোবরে সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও এই পাহাড়ি জাতীয় সড়কটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এখনও সেগুলির মেরামতি হয়নি।
তার মধ্যে বর্ষা নামার পরে ভারী বৃষ্টির জেরে বেহাল দশা রাস্তার। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক সুব্রহ্মণীয় টি বলেন, ‘জাতীয় সড়কের এখন যে পরিস্থিতি, তাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ দপ্তর এবং রাজ্য সরকার সেই কাজ হাতে নিয়েছে। পূর্ত দপ্তর পরিকল্পনা তৈরি করছে। আপাতত বর্ষায় অস্থায়ী মেরামত করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা হচ্ছে।’
প্রতি বছর জুন মাস থেকে পুজোর বুকিং শুরু হয়ে যায়। এ বার পুজোর বুকিংয়ে তেমন সাড়া না মেলার জন্য সড়ক-যন্ত্রণাকেই দায়ী করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘পর্যটনের উপরে ভরসা করে চলে এই এলাকার অর্থনীতি। একে তো গত অক্টোবরের পরে তিস্তা নদী এই এলাকার বাসিন্দাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপরে বেহাল জাতীয় সড়কের জন্য পর্যটন মার খেলে বাসিন্দাদের না-খেয়ে মরতে হবে।’