• বোলপুর কাণ্ডে আটক মৃতের ভাইয়ের স্ত্রী ও তাঁর 'প্রেমিক' হাতুড়ে ডাক্তার
    প্রতিদিন | ০৬ জুলাই ২০২৪
  • দেব গোস্বামী, বোলপুর: মধ্যরাতে গোটা পরিবারকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মা ও শিশু সন্তানের পর মৃত্যু হয় গৃহকর্তা শেখ আব্দুল আলিমের (৪৫)। শনিবার সকালে শেখ আব্দুল আলিমের মৃত্যুর খবর গ্রামে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, মৃত আব্দুল হালিমের ভাই রতন শেখের স্ত্রী স্মৃতি বিবির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল পাশের গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার শেখ সফিকুল ইসলামের। আর তা নিয়ে পারিবারিক বিবাদ চলত। হাতুড়ে ডাক্তারের বাড়ি সুপুর বানপাড়া এলাকায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই আক্রোশ বাড়ে মৃত আব্দুল আলিমের পরিবারের উপর। এর পরই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। ইতিমধ্যেই বোলপুর থানার পুলিশ হাতুড়ে ডাক্তার শেখ সফিকুল ও মৃত আব্দুল হালিমের ভাইয়ের স্ত্রী স্মৃতি বিবিকে আটক করেছে। দুজনের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

    বৃহস্পতিবার রাতে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে পিকনিকের পর খাওয়া দাওয়া করে একতলা ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন শেখ আব্দুল আলিম (৪৫), স্ত্রী রূপা বিবি (৩৭)-সহ শিশুপুত্র ছোট ছেলে আয়ান শেখ (৪)। খোলা ছিল ঘরের জানালা। অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই কেউ বা কারা কেরোসিন তেল ও পেট্রোল ছিটিয়ে মশাল দিয়ে খোলা জানালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বেশ কিছুক্ষণ পর চিৎকার চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন পাশের ঘরে শুয়ে থাকা পরিবারের বড় ছেলে শেখ ওয়াসিম আক্তার। হইচই শুনে গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারাও ছুটে আসেন। ততক্ষণে তিনজনই আগুনে ঝলসে যায় বলে গ্রামবাসীদের দাবি। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনজনকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। বর্ধমান নিয়ে যাবার পথেই প্রথমে মৃত্যু হয় শিশুপুত্র ছোট ছেলে আয়ান শেখের। পরে অবশ্য অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় রূপা বিবির।

    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্থানান্তরের পর চাঁদাইপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন বাড়ির কর্তা শেখ আব্দুল আলিম। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সকলেই। মৃতের ছেলে শেখ ওয়াসিম আক্তার বলেন,”মা ও ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাবাও মারা গেল। সব শেষ হয়ে গেল। তবে ঘটনায় যুক্তরা প্রত্যেকেই পরিচিত। তবে দোষীদের কঠোর শাস্তি দিক পুলিশ প্রশাসন।” গ্রামে রয়েছে পুলিশ পিকেট। বোলপুর মহকুমা পুলিশ প্রশাসনের নেতৃত্বে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফরেনসিক দল গ্রামে নমুনা সংগ্রহে আসার কথা। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত গ্রামবাসীরা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)