ঘুমিয়ে ছিলেন বউমা। সেই সময় তাঁকে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরের বিরুদ্ধে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ভদ্রেশ্বর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য।পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতা বধূর নাম মিঠু মিত্র। তিনি হুগলির ভদ্রেশ্বর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। শনিবার সকাল আটটা নাগাদ তিনি নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। পাশের ছিল তার ছোট মেয়ে। স্বামী নীলাংশু বাজার করার জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। সেই সময় বাড়ির সমস্ত দরজা বন্ধ করে দেয় মিঠুর শ্বশুর হেমাংশু মিত্র। এরপর কাটারি দিয়ে বউমার গলায় একাধিক কোপ বসায় ওই পৌঢ়।
মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় ঘুমিয়ে থাকা দশ বছরের নাতনির। দাদুর কাণ্ড দেখে চিৎকার করতে শুরু করে সে। সেই সময়ই প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। অনেকে দরজায় ধাক্কা দিলেও তাঁদেরকেও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হেমাংশুর বিরুদ্ধে। এরপর স্থানীয়রা দরজা ভেঙে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। স্থানীয়রাই ফোন করেন ছেলে নীলাংশুকে। বাজার থেকে দৌড়ে আসেন তিনি। গুরুতর জখম অবস্থায় মিঠুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় ভদ্রেশ্বর থানাতেও। ঘটনাস্থল থেকে সত্তর ঊর্ধ্ব বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কী কারণে এই খুন? তা এখনও স্পষ্ট নয়। নীলাংশু রেলে চাকরি করেন। শ্বশুর এবং মেয়েকে নিয়েই সংসার মিঠুর। মৃতার স্বামী নীলাংশুর অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর বাবা বউমাকে সহ্য করতে পারছিল না। তার সঙ্গে ইন্ধন দিত দুই মেয়ে। মাঝে মধ্যে বাড়িতে অশান্তিও হত। নীলাংশু কান্না জড়ানো গলায় বলেন, 'বাজারে বার হওয়ার সময় বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম চা খাবে কিনা। আমাকে বলল খাব না। তখন মিঠু আর মেয়ে ঘুমোচ্ছিল। রোজ সকালে ওঠে। একটা দিন একটু ঘুমোচ্ছিল বলে আমি আর ওকে বিরক্ত করিনি। এরপরেই আমি বাজারে চলে যাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুনতে পাই বাবা এই রকমের একটি কাণ্ড ঘটিয়েছে।'
ইতিমধ্যেই পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ভদ্রেশ্বর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর গৌতম ঘোষ বলেন, ' পারিবারিক অশান্তির কারণেই এই নৃশংস হত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবে এই খুন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। আগে থেকেই কাটারিতে ধার দেওয়া হয়েছিল বলে শুনছি। পাশাপাশি সকলে যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ঠিক তখনই এই ঘটনা ঘটেছে।’ পুলিশ জানাচ্ছে, গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।