টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে তিস্তা-মহানন্দা! উত্তরবঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন
এই সময় | ০৬ জুলাই ২০২৪
উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রবল বৃষ্টি। বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের একাধিক নদী ফুলেফেঁপে উঠেছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। এদিকে আপাতত উত্তরবঙ্গে আগামী কয়েকদিন এই ধরনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকবে বলেই জানা গিয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তরফে বেশ কয়েক জায়গায় লাল সতর্কতা ও কোথাও কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।গত কয়েকদিন ধরেই টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে পাহাড়ে। বিশেষ করে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় টানা বৃষ্টির জেরে একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ দার্জিলিঙের ধসের খবর মিলেছে। এর মধ্যে যেভাবে তিস্তার জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতেও চিন্তা বাড়ছে। বহু এলাকায় ঘরছাড়া তিস্তার পাড়ের বাসিন্দারা।
পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টির জেরে মহানন্দা নদীতেও জল বেড়েছে। সমতলে তোর্সা, কালিচিনি, রায়ডাক, জলঢাকা সহ নানা নদীতে জল অনেকটাই বেড়েছে। ইতিমধ্যেই প্রতিটি জেলায় প্রশাসনের তরফে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে। কিছু জায়গায় নদীগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা দলগুলিকে নামানো হয়েছে।
তিস্তায় জল বাড়তে থাকার জেরে ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়া হচ্ছে। শনিবার সকালে জলপাইগুড়িতে তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ২৯৬৯ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। শিলিগুড়ির পাশাপাশি জলপাইগুড়ির একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। একইভাবে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বহু নদীতে জলস্তর বেড়েছে। কিছু জায়গায় জল বিপদ সীমার কাছাকাছি রয়েছে। সেচ দফতরের তরফেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আগামী কয়েকদিন নদীগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাবে বলেই খবর। এদিকে ডুয়ার্সের বহু এলাকায় চাষের জমিগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারেও বিঘার পর বিঘা জমি জলের তলায়।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, শনিবার-রবিবারও উত্তরবঙ্গে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে উপরের দিকের পাঁচ জেলায়। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং-এ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি চলবে। বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা। অক্ষরেখা দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া থেকে কাঁথির উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে রথযাত্রার দিন পর্যন্ত গোটা রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বৃষ্টি যত বাড়ছে আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে উত্তরবঙ্গের পর্বত পাদদেশীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের। লাগাতার বৃষ্টির কারণে তিস্তার জল ঢুকে বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫০ এর বেশি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। বহু জায়গায় জল জমে রাস্তা, কৃষিজমি একাকার হয়ে গিয়েছে। জলমগ্ন চাষের জমিতে নষ্ট হয়েছে ফসল। প্রতিবছর বর্ষা এলেই এই এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ে তবে এবছর পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।