‘হিন্দুরাষ্ট্র করার প্রচেষ্টা আটকানো গিয়েছে’, ন্যায় সংহিতা নিয়েও সরব অমর্ত্য
এই সময় | ০৭ জুলাই ২০২৪
ভারতবর্ষ যে হিন্দু রাষ্ট্র নয়, লোকসভা নির্বাচনে দেশের জনগণের রায়ে সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে, দেশে ফিরে এমনটাই মতামত দিয়েছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। শনিবার তিনি দাবি করলেন, ভারতবর্ষকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার প্রয়াস থেকে অনেকটাই আটকানো গিয়েছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রের বিজেপির সরকারের বিরোধিতা আগেই করেছিলেন অর্থনীতিবিদ। নব নির্বাচিত সরকারের আমলে চালু হওয়া ন্যায় সংহিতা আইন নিয়েও এবার সমালোচনায় সরব হলেন তিনি।প্রতি বছরের মতো এবছরও বোলপুরের একটি বেসরকারি সভাকক্ষে প্রতীচী ট্রাস্ট ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল শনিবার। যেখানে অংশ নেন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সহ একাধিক অধ্যাপক এবং বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই আলোচনা সভার শেষেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে স্কুলে পর্যন্ত আলোচনা পৌঁছে গিয়েছিল যে কীভাবে ভারতবর্ষকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানো যায় ৷ কিন্তু, আমাদের জানা দরকার হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে পার্থক্য শিশুদের মধ্যে একেবারেই নেই ৷ আমাদের দেশে লোকসভায় যে নির্বাচন হল, তাতে ভারতবর্ষকে হিন্দুরাষ্ট্র করার যে প্রচেষ্টা চলছিল তা খানিকটা হলেও আটকানো গেল৷ পুরোটা আটকানো গিয়েছে, তা অবশ্য বলা যাবে না।’
নাম না করে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ওরা এটা মানতে পারল না যে যেখানে বড় মন্দির তৈরি হল সেখানে একজন সেকুলার দলের প্রার্থী, হিন্দু রাষ্ট্র গড়তে চায় এমন প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছে।' তাঁর মতে, ‘ভারত একেবারেই ধর্মনিরপেক্ষ দেশ নয়, তবে বহু ধর্মের দেশ অবশ্যই।’
গত ২৬ জুন আমেরিকা থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘ভারতবর্ষ যে হিন্দুরাষ্ট্র নয়, ভারতীয় ভোটারদের সেই মতের প্রতিফলন ঘটেছে। মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসুর দেশে এটা হওয়ার কথাও নয়।’
এদিন নব প্রচলিত ন্যায় সংহিতা আইন নিয়েও সমালোচনা করতে শোনা যায় তাঁকে। তাঁর কথায়, ‘একটা সংবিধান বদলাতে গেলে যে আলোচনা দরকার, সেগুলো হয়নি। এটা আক্ষেপ ৷ আরও আলোচনার প্রয়োজন ছিল ৷ তার প্রমাণ তো দেখিনি ৷ মণিপুরে সমস্যা আর মধ্যপ্রদেশে সমস্যা নিশ্চয়ই এক নয় ৷ এগুলো নিয়ে আমাদের অনেক আলোচনা করা উচিৎ ছিল। ক্ষমতার বলে চট করে পাশ করে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু এটাকে খুব শুভ পরিবর্তন বলে মনে করি না ৷’