'ধোঁয়া'-ই যত নষ্টের গোড়া। কয়েকদিন আগে বাঁকুড়ার সদর থানার পুলিশ চক বাজার থেকে ইলিশ, ভেটকি, পাবদা চুরির ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে তিন চারটি দোকানে চুরি! ক্যাশবাক্সও গায়েব ছিল। এবার ঘটনার তদন্তে নেমে চোখ কপালে উঠল পুলিশের। টাকা, পয়সা, সোনা , এমনকী ইলিশ নয়, চোর খোঁজ করতে বেরিয়েছিল বিড়ির। সব দোকান বন্ধ থাকায় শেষমেশ চুরির পথ বেছে নেয় সে। কিন্তু, বিড়ি চুরি করতে গিয়ে নজর যায় সটান ইলিশ, ভেটকি, পমফ্রেটে। মানুষের মন আর কী! বিড়ি ভুলে ইলিশ দেখেই 'ইউরেকা' বলে চিৎকার করে ওঠে মন! তারপর, বাকিটা ইতিহাস।চুরির ঘটনা সামনে আসার পর বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ চক বাজারের একাধিক সিসি ক্যমেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। আর তা দেখেই বাঁকুড়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পোদ্দার পাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় সুরজ দে নামক এক ব্যক্তিকে। আর জেরায় সে যা জানায় তাতে চোখ কপালে দুঁদে পুলিশ অফিসারদেরও।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত নিজের বাড়িতে বসেই মদ খেয়েছিল সুরজ। নেশাগ্রস্থ সুরজের মাথায় চেপে বসে বিড়ির নেশা। নিজের পকেট হাঁতড়ে বিড়ি না পাওয়ায় শেষমেশ বাজারে বের হয় সুরজ। চক বাজারেও খোঁজ চালায় সে। কিন্তু, সেখানেও দোকান খোলা না থাকায় বিড়ির খোঁজে একের পর এক দোকানের দরজা ভেঙে ফেলে। দোকানগুলিতে বিড়ি না মিললেও একটিতে হাতের কাছে ইলিশ, পমফ্রেট, ভেটকি, ডিম ও কাজু যা পায় তা নিয়েই চম্পট দেয় সুরজ। বিড়ির জন্য একের পর এক দোকানের দরজা ভেঙে এমন চুরির ঘটনায় তাজ্জব তদন্তকারীরা।
তবে কয়েকটি ইলিশের লোভ করে যে এভাবে তাকে জেলের হাওয়া খেতে হবে, তা সে বুঝতে পারেনি, অকপট স্বীকারোক্তি সুরজের। রবিবার তাঁকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার আতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সিদ্ধার্থ দর্জি জানান, পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে এবং সুরজ দে নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালেও চুরির অভিযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র চুরির উদ্দেশ্যেই সে একের পর এক দোকানগুলি ভেঙেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।