সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই পরিবারের তিনজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চক্রান্ত! বোলপুরের অগ্নিকাণ্ডে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বোলপুর থানার রায়পুরের সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন গীত গ্রামে ঘুমন্ত অবস্থায় একই পরিবারের তিন সদস্যকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। মৃতদের নাম আব্দুল আলিম(৩৮), তাঁর স্ত্রী কেরিমা বেগম (৩০) এবং ছোট ছেলে আয়ান শেখ (৪)। অভিযোগ, রাতে বাড়িতে একটি জানালা খুলে ঘুমোচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময় বাইরে থেকে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের গায়ে। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তিন জনেরই।এই ঘটনার তদন্তে নেমে পারিবারিক টানাপোড়েনের বিষয়টিই উঠে আসে। গ্রেফতার করা হয়েছে আব্দুল আলিমের সেজ ভাইয়ের স্ত্রী নাজনী নিহারকে। তাঁকে বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত চন্দন ইসলামকেও আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দাদের অনুমান নাজনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল পেশায় হাতুড়ে চিকিৎসক চন্দন ইসলামের। আর সেই বিষয়টিই কোনওভাবে কেরিমা বেগম জানতে পেরে যান। যাতে কাউকে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে না পারেন, সেই জন্যই এই হত্যার ছক বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিশের।
তদন্তকারীরা অনুমান করছেন, প্রথমে জানালা দিয়ে কেরোসিন ছিটিয়ে দেওয়া হয় এই তিনজনের গায়ে। এরপর ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। অগ্নি সংযোগ করার আগে কোনও গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। চন্দনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনার নতুন কোনও দিক উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আব্দুল আলিমের পরিজনরা জানাচ্ছেন, প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন হয়তো শর্ট সার্কিট থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, পরে তাঁরা গিয়ে দেখেন, এসি থেকে শুরু করে বাড়ির কোনও সুইচবোর্ডই সামান্যতম ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এরপরেই তাঁদের মনে হয়েছিল চক্রান্তের বিষয়টি। তিনজনের শরীর থেকেই কেরোসিন তেলের গন্ধ আসছিল বলে দাবি করা হয়। আব্দুল পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। সেক্ষেত্রে ব্যবসায় তাঁর কারও সঙ্গে কোনও মনোমালিন্য ছিল কিনা, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা।
কিন্তু, তদন্তে ব্যক্তিগত টানাপোড়েনের দিকটি উঠে আসে। সেই মোতাবেক তদন্ত করছে পুলিশ। আব্দুল আলিমের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ।