বিরাট বিপর্যয়ের দোরগোড়ায় দার্জিলিং,বন্ধ পাহাড়ের ২ পর্যটনকেন্দ্র, থমকে টয়ট্রেন
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ জুলাই ২০২৪
আশঙ্কাটা আগেই ছিল। সেটাই এবার বর্ষায় যেন সত্যি হচ্ছে বার বার। একের পর এক ধস। সেই সঙ্গেই তিস্তার ভয়াবহ রূপ। সব মিলিয়ে একেবারে বিপর্যয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে শৈলশহর দার্জিলিং।
অনেকের মতে, গত কয়েকবছর ধরে দার্জিলিংয়ে একের পর এক বহুতল তৈরি হয়েছে। যাবতীয় নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তৈরি হয়েছে এই সব অবৈধ নির্মাণ। যার ফল ভুগতে হচ্ছে এবার। ইতিমধ্যেই লেবং কার্ট রোডে ধস নেমেছে। ধস নেমেছে দার্জিলিং স্টেশনের কাছে। তবে দার্জিলিংয়ে প্রতিবারই বর্ষা এলে ধস নামে। কিন্তু সেটা যে এমন ভয়াবহ হয়ে যাবে সেটা আগে হয়তো বোঝা যায়নি।
এদিকে প্রবল বৃষ্টি ও ধসের জেরে দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়াটাই এখন কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে এবার দার্জিলিংয়ের দুটি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হল। রক গার্ডেন ও গঙ্গামায়া পার্ক আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হল। জিটিএর পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই দুটি জায়গা। মূলত পর্যটকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই দুটি পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যটকরা সেখানে যেতে পারবেন।
এদিকে দার্জিলিংয়ের ধস নিয়ে ইতিমধ্য়েই নানা মহলের নানা মত। দুটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে পানীয় জলের ট্যাঙ্কের নীচে থেকে ধস নেমেছে। সেক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে পাহাড়ের জল কোনওভাবেই একটা জায়গায় জড়ো হয়ে গিয়েছিল। সেই জলটা জমতে জমতে তা নীচের মাটিকে ধসিয়ে দেয়।
এদিকে দার্জিলিংয়ে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বার বার নানা অভিযোগ উঠেছে। বার বারই এই অবৈধ নির্মাণগুলি ভেঙে দেওয়ার কথা ওঠে। মাঝেমধ্যে পুরসভা নানা নোটিশ পাঠায়। সেই মতো ব্যবস্থাও নেয় পুরকর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেটা পর্যাপ্ত নয়। দেখা যায় যে আবার নতুন করে বহুতল তৈরি হচ্ছে। আর পাহাড়ে খাঁজে কোনও নিয়ম না মেনেই তৈরি হচ্ছে এই বহুতল। বার বার এনিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু কাদের মদতে এগুলি হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।
তার উপর দার্জিলিংয়ের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। পরিকল্পনাবিহীন নির্মাণ, নিকাশির অব্যবস্থার মাসুল গুনছে দার্জিলিং। প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি, বিদেশি পর্যটক দার্জিলিংয়ে আসেন। কিন্তু সেই দার্জিলিং কেন এত অবহেলিত? কেন দার্জিলিংকে বাঁচিয়ে রাখতে কড়া কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? উত্তর সিকিমের বিপর্যয়ের পরেও হুঁশ ফেরেনি সরকারের।
এদিকে ধসের জেরে জাতীয় সড়কে ফাটল। শুকনা থেকে কার্শিয়াং যাওয়ার রাস্তায় বিপত্তি। রবিবার পর্যন্ত দার্জিিলংয়ে টয়ট্রেন পরিষেবা বন্ধ।