মায়াপুরের রথ এবার বারাসাতের রাজপথে! শুনতে কিছুটা অবাক হচ্ছেন? বাস্তবে সেটাই হল। মায়াপুরের ইসকনের তরফে রথযাত্রার আয়োজন করা হল বারাসতের ন'পাড়া কালীবাড়ি এলাকায়।বারাসাতে গত বছর থেকে ইসকনের উদ্যোগে এই রথযাত্রার উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। জানা যায়, শ্রীধাম মায়াপুর ইসকনের তরফ থেকে একটি কেন্দ্র খোলা হয়েছে বারাসাতে। তাঁদের উদ্যোগেই এই রথ যাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। এদিনের রথযাত্রার উপলক্ষে সুসজ্জিত জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার রথ দেখা যায়। সেখানেই এদিন জগন্নাথ সেবার আয়োজন করা হয়।
এই যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বখ্যাত মায়াপুর নগরীর ইসকন মন্দিরের ভগবান সেবক, পূজারী সহ সহস্রাধিক ভক্তবৃন্দরা। ন'পাড়া কালীবাড়ি থেকে পাইনিয়ার পার্ক এ মাসির বাড়িতে গিয়ে শেষ হয় যাত্রা পথ। তবে এই শোভা যাত্রায় সুদর্শন রথের সঙ্গে সঙ্গী হয়েছিলেন আরো একটি রথ,আর সেই রথের যাত্রী হিসেবে ছিলেন স্বামী শ্রীপ্রভূপদ।
উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই প্রভূপদ ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক, কৃষ্ণের শিক্ষক, ধর্মপ্রাণ এবং ধর্মদর্শন যিনি ভারত থেকে ছড়িয়েছিলেন চেতনা বিশ্বের কাছে।।এবং এখনও তাঁকেই শ্রীধাম মায়াপুর নগরীর মানব স্বর্গ রাজ্যে ইসকনের প্রধান মানা হয়। সব মিলিয়ে এদিন বারাসতে ইসকনের রথযাত্রার ঘিরে মানুষের উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ প্রসাদেরও আয়োজন ছিল এদিনের রথযাত্রা উপলক্ষে।
অন্যদিকে, নদিয়ার নবদ্বীপ মায়াপুর ইসকন মন্দিরের মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। রথযাত্রা উপলক্ষে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি ভক্তবৃন্দের ঢল নামে মায়াপুরে। মায়াপুর ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দির থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রাজাপুরের জগন্নাথ মন্দির থেকে ভগবান জগন্নাথদেবের রথ নন্দী ঘোষ, বলদেবের রথ তালধ্বজ ও সুভদ্রা দেবীর রথ পদ্মধ্বজ— এই তিনটি সুসজ্জিত রথ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে ও হরিনাম সংকীর্তনের মধ্যে দিয়ে রাজাপুর থেকে মায়াপুর ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দিরের উদ্দেশে রওনা হয়।
ইতিহাস বলছে, এক সময়ে মায়াপুর আর রাজাপুর নামের দু’টি গ্রাম ছিল। রাজাপুরের বেশিরভাগই ছিলেন বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রায় ৫০০ বছর আগে নাকি এক পুরোহিত স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রথম রথযাত্রার আয়োজন করেন। রাজাপুর থেকে রথ যেত মায়াপুর। সেখান থেকে আবার ফিরত রাজাপুর। বহু দিন এই উৎসব বন্ধ ছিল। পরে ইসকন রথযাত্রা উৎসব শুরু করে। সেই রথ যাত্রা আজও পালিত হয়ে আসছে মহা সমারোহে।