সূর্য ওঠার ঘণ্টা তিনেক পরেও রাস্তা জুড়ে জ্বলছে স্ট্রিট লাইট। একই ঘটনা বেলাশেষে — গোধূলির আগেই নিয়নের আলোয় রাঙা রাজপথ। এমন বাতিস্তম্ভের সংখ্যা রাজ্যের পুর এলাকাগুলিতে কম নয়। এর জেরে বাড়ছে বিদ্যুতের বিল। সেই খরচে নিয়ন্ত্রণ আনতে এ বার রাস্তার সব বাতিস্তম্ভে টাইমার বসানোর নির্দেশ দিল রাজ্য পুর দপ্তর। রাজ্যের সব পুরনিগম এবং পুরসভাগুলিকে এ কথা জানানো হয়েছে।সম্প্রতি পুর-প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিষয়গুলি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন, তার অন্যতম ছিল বিদ্যুতের অপচয়। এবং তার অন্যতম কারণ, অসময়ে স্ট্রিট লাইট জ্বলে থাকা। ওই বৈঠকের পরেই সমস্যা-সমাধানে নির্দেশ দিয়েছে পুর দপ্তর। খরচ কমাতে টাইমারের পাশাপাশি সোলার পাওয়ারের ব্যবহার বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে পুর-প্রশাসনের কর্তাদের।
কলকাতা, দমদম পুরসভায় বছরখানেক আগে স্ট্রিট লাইটে টাইমার বসানো হয়েছে। ফলে সেখানে নির্দিষ্ট সময় মেপেই রাস্তায় আলো জ্বলে-নেভে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার টালিগঞ্জ ও সংযোজিত এলাকায় এখনও পর্যন্ত টাইমার বসেনি। ফলে সেখানে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে বলেই অভিযোগ। টাইমার বসানোর পরে তার রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক ভাবে হচ্ছে না, এমন অভিযোগও রয়েছে। সে দিকেও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিদ্যুৎ) সন্দীপরঞ্জন বক্সির বক্তব্য, ‘এটা ঠিক যে কলকাতার সব জায়গার বাতিস্তম্ভে টাইমার নেই। খুব তাড়াতাড়ি আমরা তা বসিয়ে ফেলব।’ ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, ‘টাইমার বসানোর চেষ্টা চলছে। এতে খরচ কমবে বলেই অফিসাররা জানিয়েছেন।’
বিদেশে রাস্তার আলো নিয়ন্ত্রণে সেন্সর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই যন্ত্রের দাম বেশি, আয়ু তুলনায় কম। উল্টো দিকে টাইমারের দাম কম, রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বেশি নয়। কলকাতা পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের প্রাক্তন এক কর্তার বক্তব্য, ‘টাইমারের পাশাপাশি পার্ক এবং কিছু রাস্তায় সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করলে খরচ অনেক কমবে। দেশপ্রিয় পার্কে আলো জ্বালানোর জন্য আগে বিদ্যুৎ বিল মেটাতে হতো মাসে ৩৯ হাজার টাকা। এখন সেখানে সোলার লাইট বসানোয় মাসে খরচ ৮ হাজার টাকার মতো।’