ফুলের পাহাড় থেকে সার তৈরির আবেদন কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে
এই সময় | ০৮ জুলাই ২০২৪
এই সময়, আসানসোল: দৈনিক ৩০-৪০ কেজি জবা, গাঁদাফুল জমে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে। বিশেষ পার্বণে কিংবা উৎসবের মরশুমে ফুলের পরিমাণ আরও বাড়ে। মাইথন বেড়াতে আসা পর্যটকরাও পুজো দিতে একবার ঘুরে আসেন এই মন্দির। প্রতিদিনের এই ফুলের পাহাড় নিয়ে চিন্তিত মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাঁরা চাইছেন এ ব্যাপারে তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসুক কোনও সংস্থা।রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন এই মন্দিরে বিশেষ দিনে পুজো দেওয়ার জন্য লাইন দেন কয়েক হাজার মানুষ। প্রতিদিনের জমা ফুল পুজোর পর ফেলা হয় ডাস্টবিনে। সেখানে জমে কখনও দুর্গন্ধ ছড়ায়। মন্দির কর্তৃপক্ষ অবশ্য ব্লিচিং ছড়িয়ে দেন। ফুল ছাড়া মন্দিরে আর একটি সমস্যা প্লাস্টিক। মন্দিরের দু’পাশ জুড়ে থাকা দোকানগুলোয় অবাধে বিক্রি হয় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ থাকলেও ওই সব ক্যারি ব্যাগ ৭৫ মাইক্রনের নীচে।
কাশীপুর রাজ পরিবারের সঙ্গে জড়িত এই মন্দির প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাঝে বন্ধ থাকে আরতির কারণে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভিন রাজ্য থেকেও পুজো দিতে আসেন পুণ্যার্থীরা। মন্দির পরিষ্কার প্রসঙ্গে অন্যতম প্রধান পুরোহিত দিলীপ দেওঘরিয়া বলেন, ‘প্রতিদিনের পজোর ৩০-৪০ কেজি ফুল ব্যবহারের পর যদি অন্য ভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে একবার কথা বলেছিলাম ইসিএলের প্রাক্তন ডিরেক্টর পার্সোনেল কে পাত্রর সঙ্গে। তিনি তখন জানিয়েছিলেন, তাঁরা কালীঘাট ও দেওঘরে দু’টি মেশিন দিয়েছেন যা দিয়ে এই ফুলগুলো থেকে সার তৈরি করা যায়। আমাদেরও তাঁরা এই ধরনের একটি মেশিন দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু তিনি চলে গেলে কাজটা আর এগোয়নি।’
এখনও বিভিন্ন সংস্থার কাছে তাঁরা আবেদন করছেন জানিয়ে প্রধান পুরোহিত বলেন, ‘আমরা ইসিএল সমেত বিভিন্ন সংস্থার কাছে আবেদন রাখছি, যদি কেউ এই ধরনের একটি যন্ত্র আমাদের দেন তাহলে খুবই ভালো হবে। কোনও সংস্থা নিজে থেকেও এই কাজ করতে পারেন।’ বর্তমানে প্রতিদিনের জমা ফুল নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে রেখে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
দুর্গন্ধ বা দূষণ রোধে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়। প্লাস্টিকের বিষয় তিনি বলেন, ‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাজ এটা। যাঁরা পুজো দিতে আসেন তাঁরাও দোকানে গিয়ে প্রসাদ, ফুল, বেলপাতা প্লাস্টিকের ব্যাগে দিতে বলেন।’
কল্যাণেশ্বরী-মাইথন হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং সালানপুর ব্লক তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বে থাকা কল্যাণেশ্বরীর বাসিন্দা মনোজ তিওয়ারি বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে কল্যাণেশ্বরী মন্দির ও মাইথন পরিষ্কারে কাজ শুরু করেছিলাম আমরা। তার পর অবশ্য সেটা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কল্যাণেশ্বরী মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলব।’