এবার ছেলেধরা সন্দেহে বসিরহাটে এক যুবককে গণপিটুনি। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের মাটিয়ায়। পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। উদ্ধার করার পর ওই যুবককে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার রাজেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মমিনপুর উত্তরপাড়ায় এই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়দের দাবি, ওই যুবক এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। হাতে ছিল একটি বস্তা। তাকে প্রশ্ন করা হলে সে কোনও নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেনি। এরপরেই তাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে স্থানীয়রা এবং মারধর শুরু করে। এরপর গ্রামবাসীদেরই একাংশ মাটিয়া থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুল্লাহ গাজী বলেন, 'আমি বাড়িতে ছিলাম না। এসে শুনলাম ওই ব্যক্তিকে সকলে ছেলেধরা সন্দেহে আটক করেছে। ওকে নিজের নাম জিজ্ঞাসা করা হলেও বলতে পারেনি। কোথায় বাড়ি, তাও জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু, ও তো ঠিক করে বাংলা বলতেই পারছিল না। পুলিশ এসে বলল ও নাকি মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু, এই বক্তব্য মানতে পারছি না।'
প্রত্যক্ষদর্শী তুহিনা পারভিন বলেন, 'আমি দেখেছি দুই জন শিশুকে ও নিয়ে যাচ্ছিল। ওকে ধরা হয়। প্রশ্ন করা হলেও কোনও উত্তর দেয়নি। ও দুই জন শিশুকে নিয়ে যাচ্ছিল আমি নিশ্চিত। পুলিশ এক্ষেত্রে সঠিক কথা বলছে না।'
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই যুবকটিকে আটক করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, স্থানীয়রা যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করে। তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মাটিয়া থানার পুলিশ জানান, ওই যুবকের বাড়ি শাসনে। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসক বলেছেন, দেহে তেমন কোনও চোটের চিহ্ন নেই। তাঁর পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা আসলে তাঁদের হাতে ওই যুবককে তুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছেলেধরা সন্দেহে অনেককে মারধরের অভিযোগ ওঠে। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে সবচেয়ে বেশি গণপিটুনির অভিযোগ এসেছে। গুজবে কান না দেওয়ার জন্য পুলিশের তরফে বিভিন্ন সময় প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও গণপিটুনির ঘটনা থামছেই না। নতুন করে এই ঘটনা চিন্তার ভাঁজ ফেলছে প্রশাসনের কপালে। গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।