খড়গপুর স্টেশন থেকে উদ্ধার শিশুকে দত্তক স্প্যানিশ মহিলার
এই সময় | ০৮ জুলাই ২০২৪
খড়গপুর স্টেশন থেকে প্রশাসনের চেষ্টায় উদ্ধার হয়েছিল এক শিশু। এরপর তার ঠাঁই হয়েছিল মেদিনীপুর হোমে। এবার নিজের একটি বাড়ি ও মা পেল ওই শিশু। এবার মায়ের সঙ্গে বিমানে স্পেনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে সে। স্বাভাবিকভাবেই খুশির অন্ত নেই তার।জানা গিয়েছে, স্পেনের বার্সোলোনার এক মহিলা ওই শিশুকে দত্তক নিতে আগ্রহী হন। এরপর নিয়ম মোতাবেক তিনি আবেদন করেন। তাঁর সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়। ৬ বছরের সন্তানকে নিয়ে এবার বাড়ি পাড়ি দিলেন সেই বিদেশিনী। ছোট দুটি হাত জাপটে ধরে আগামীর স্বপ্ন চোখে নিয়ে আকুল বিদেশিনী। ছেলেকে পড়াশোনা শেখানো থেকে শুরু করে তাকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলাই প্রাথমিকতা বলে জানান তিনি। মেদিনীপুরের হোম সূত্রে খবর, কোটালোনিয়াতে সরকারি একটি পদে ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত ওই মহিলা।
এদিকে ওই শিশুটিকে খড়গপুর স্টেশন থেকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর সরকারি বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে রাখা হয়। সেই বছরই তাকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করেন বার্সোলোনার বছর ৪৭ এর ওই মহিলা। অথরাইজড অ্যাডপশন এজেন্সির মাধ্যমে যাবতীয় নিয়ম অনুসরণ করা হয়। সোমবার মেদিনীপুরে এসে পৌঁছান ওই মহিলা। সন্তানকে দেখে খুশি তিনি। চোখে দেখা মাত্রই জাপটে ধরেন।
অন্যদিকে, ওই খুদের জন্য উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও তাকে ছাড়তে মন খারাপ হোমের অন্যান্যদের। খুদেকে উপহার দেওয়া হয়। হাতে তুলে দেওয়া হয় একবাক্স চকোলেট। এদিকে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে সে। ঠিকানা বদলের একটা আভাস পেয়েছে। ইতিমধ্যেই পাসপোর্টও তৈরি হয়ে গিয়েছে তার।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি শিশুটির কাগজপত্র, ভিসা বিদেশিনীর হাতে তুলে দেন। তিনি বলেন, ‘মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন থেকে এখনও পর্যন্ত ৬২ জন শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। দত্তকের পর শিশুটি ভালো আছে কিনা, তার দেখভাল ঠিকমতো করা হচ্ছে কিনা, সেই দিকেও প্রশাসন নজর রাখে।’ অর্থাৎ শিশুগুলি তাদের নতুন বাড়িতে ভালো আছে কিনা, সেই দিকেও কড়া নজর দেওয়া হয়।
এর আগে চলতি বছর মার্চ মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বালিকা হোম থেকে ছয় জন শিশুকে দত্তক নিয়েছিলেন ছয় দম্পতি। কলকাতা, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ছত্তিশগড়ে পাড়ি দেয় এই শিশুগুলি। অপর শিশুটি পাড়ি দিয়েছিল ছত্তিশগড়ে। উল্লেখ্য, আগে একদিন থেকে ছয় বছরের শিশুদের দত্তক নেওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যেত। পরে ছয় বছর থেকে আঠারো বছর বয়সীদের দত্তকের আবেদনও করা যাবে অনলাইনে, এই নিয়ম আনা হয়।