'বাড়ির সব কাজ করাতে বাধ্য করত...', পুত্রবধূকে কুপিয়ে খুনের মোটিভ 'ফাঁস' শ্বশুরের
এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
শনিবার হুগলির ভদ্রেশ্বরে এক প্রবীণের বিরুদ্ধে ঘুমন্ত বউমাকে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। মিঠু মিত্র নামক ওই বধূর স্বামী বাজার করতে গেলে এই কাণ্ড ঘটান তাঁর বাবা হেমাংশু মিত্র, অভিযোগ এমনটাই। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত হিমাংশু মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে।কিন্তু, কেন বউমাকে এভাবে কুপিয়ে হত্যা করলেন এই প্রবীণ? চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন হেমাংশু। তিনি বলেন, 'এই বয়সে আমাকে নিজের জামাকাপড় কাচা থেকে শুরু করে সব কাজ করতে হত। ছেলে একেবারে দেখভাল করত না।' পাশাপাশি তাঁর মেয়ের থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিলেন ছেলে। রেলে মোটা বেতনের চাকরি করলেও সেই টাকা ফেরত দেননি ছেলে নীলাংশু, দাবি এই প্রবীণের। ছেলে-বউমা তাঁকে দেখতেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।
পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, ‘বাড়িতে রাখা শাবল ব্যবহার করেছিলাম।’ তাঁর সমস্ত টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ছেলে এবং বউমা, এমনটাও দাবি করেন তিনি। এদিকে বাবার তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছেলে নীলাংশু। তিনি বলেন, 'বাবার জন্য নিয়মিত ওষুধ কিনে আনতাম। একজন প্রবীণের এই বয়সে প্রয়োজন, খাবার, ওষুধ, যত্ন আর ভালোবাসা। পাড়ার প্রতিটা মানুষ জানেন আমি বাবাকে এই সমস্ত কিছু দিয়েছি। কোনওদিন অযত্ন করিনি।'
এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে বাবাকে কেউ প্ররোচিত করেছে। এই নিয়ে তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আপাতত তদন্তের কারণে ওই বাড়িতে আমি থাকতে পারছি না। বাইরে বাইরেই থাকতে হচ্ছে। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করছে। আশা করি সত্যিটা প্রকাশ্যে আসবে।’ এই প্রসঙ্গে চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, 'তদন্ত হচ্ছে। এই নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।'
উল্লেখ্য, শনিবার মিঠু মিত্র সকাল আটটা নাগাদ ঘুমোচ্ছিলেন। পাশের রুমে ছিলেন বছর ১০-এর মেয়ে। এদিন ছেলে বাজারে যাওয়ার পরেই হেমাংশু বাড়ির সমস্ত দরজা বন্ধ করে দেন। এরপর বউমাকে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে মিঠুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। নীলাংশুর দাবি, তাঁর সহদোরা বাবাকে নানান সময় উসকানিমূলক কথাবার্তা শোনাত। স্ত্রীর মৃত্যুর দোষীর শাস্তি চেয়েছেন তিনি।