• 'মাস মাইনে কেন পাচ্ছি না?' তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তাল...
    ২৪ ঘন্টা | ০৯ জুলাই ২০২৪
  • শ্রীকান্ত ঠাকুর: কোনও ক্ষেত্রে ৭ মাস কোনও ক্ষেত্রে ১ বছর। বেতন পাচ্ছেন না বালুরঘাট হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা। বেতনের দাবিতে সোমবার বিকেল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ করে দিলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, ১১৬ জন অস্থায়ী কর্মী যারা হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা, যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,  স্কাভেঞ্জিং, ওয়ার্ড ক্লিনিং, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কাজের সঙ্গে যুক্ত। এবং এই প্রতিটি পরিষেবাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

    হাসপাতালের পরিষেবাকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এই কর্মীদের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১১৬ জন কর্মী একসঙ্গে কাজ বন্ধ করায় হাসপাতালের পুরানো বিল্ডিংয়ের থাকা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ যেমন- আইসিইউ, মেল মেডিক্যাল, ফিমেল মেডিক্যাল এবং ইমারজেন্সি বিভাগ পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা।

    হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালে পক্ষ থেকে বারবার বিল জেলা ট্রেজারি অফিসে পাঠানো হলেও ট্রেজারি অফিসার কোনও এক অজানা কারণে সেই বিলগুলি পাস করছেন না। যে কারণে এই বকেয়া পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিল বকেয়া কেন পড়ল সেই প্রশ্নেরও সদউত্তর জানা নেই জেলা হাসপাতালে সুপার-এর কাছে। তাঁর বক্তব্য যখন যেমন ভাবে বিল আসে তিনি দ্রুততার সঙ্গে সেই বিল ট্রেজারিতে পাঠান। নতুন ট্রেজারি অফিসার গঙ্গারামপুর হাসপাতালের বিল দ্রুততার সঙ্গে ছাড়লেও বালুরঘাটের পাঠানো বিল ছাড়তে চাইছেন না। এই বিষয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস ও জেলা শাসক বিজন কৃষ্ণা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং একটি সমাধান সূত্র বার করে সেই মতো চিঠিও দিয়েছিলেন ট্রেজারি অফিসারকে কিন্তু কোন কিছুতেই কোনও লাভ হয়নি। পরিস্থিতি যেখানকার সেখানে যে কারণে দীর্ঘ সময় ধরে বিল আটকে রয়েছে এই সমস্ত কর্মীদের বেতনের।

    জেলা হাসপাতালের সূত্রের খবর, এই কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদারি সংস্থা প্রতিমাসে এই সমস্ত কাজের জন্য ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা পেয়ে থাকেন। কোন এক অজানা কারণে তাদের সেই বিল বন্ধ। নতুন ও পুরাতন বিল্ডিং মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের মতো কর্মী কাজ করেন ঠিকাদার সংস্থার নিয়ন্ত্রণে। বেতন না পাওয়ার সমস্যা মূলত পুরাতন বিল্ডিং এর কর্মীদের মধ্যে। যে কারণে ১১৬ জন কর্মবিরতি শুরু করেছেন সোমবার বিকেল থেকে।

     দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বালুরঘাট হাসপাতালে ক্লিনিং বিভাগে কাজ করেন বাসন্তী সর্দার। তাঁর বলেন, 'দীর্ঘ বছর ধরে হাসপাতালে কাজ করছি এতদিন ধরে বেতন না পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।  সাত মাস বহু কষ্ট করে সংসার চালিয়েছি। আর সম্ভব হচ্ছে না যে কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে হল। পরিষেবা বিঘ্নিত হবে, সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে কিন্তু আমাদের আর কিছু করার নেই, দেওয়ালের পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।' 

    পরিষেবা বিঘ্নিত হবেই এমনটা ধরে নিচ্ছেন বেসরকারি সংস্থার এই কর্মীরা। পরিষেবা দিতে অসুবিধা হবে এ কথা ও স্বীকার করছেন হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ কিন্তু কোন পথে সমস্যা সমাধান জানা নেই। আগামী কাল থেকেই বালুরঘাট হাসপাতালের পুরনো ভবনের পরিষেবা যে বিঘ্নিত হবে তা মেনে নিয়েছেন হাসপাতাল সুপার। তিনি বলছেন হাসপাতালে পরিষেবা সচল রাখতে যতটা সম্ভব কাজ করা হবে কিন্তু এইভাবে বেশি দিন চালানো সম্ভব না।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)