• একজনের স্বার্থরক্ষায় কেন উৎসাহী রাজ্য? সুপ্রিম-প্রশ্ন
    এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
  • এই সময়, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রইল সুপ্রিম কোর্টেও। সন্দেশখালির দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা শেখ শাহজাহান ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে গায়ের জোরে জমি দখল এবং মহিলাদের উপর নির্যাতনের সবক’টি অভিযোগের তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।সোমবার সেই শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বিআর গভাই ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, ‘একজন ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য কেন রাজ্য সরকার আবেদন করছে?’ ঠিক একই প্রশ্ন তুলেছিল কলকাতা হাইকোর্টও। এদিনের শুনানিতে রাজ্যের তরফে বর্ষীয়ান কৌঁসুলি অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ও জয়দীপ গুপ্ত যুক্তি দেন, রেশন দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন মামলায় রাজ্য পুলিশ যথেষ্ট পদক্ষেপ করলেও হাইকোর্টের রায়ে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে বেশকিছু মন্তব্য করা হয়েছে।

    সেই কারণেই রাজ্য শীর্ষ আদালতে এসেছে। সিঙ্ঘভি আরও সওয়াল করেন, ‘এখনও পর্যন্ত ৪৩টি এফআইআর দায়ের হয়েছে সন্দেশখালি সংক্রান্ত৷ এরমধ্যে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত এফআইআরও আছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে৷’ তাঁর সংযোজন, ‘মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার৷ মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ কোথাও কোনও সমস্যা নেই৷ তারপরেও অন্যায় ভাবে গোটা ঘটনায় রাজনীতির রং লাগানো হচ্ছে৷’

    যদিও বিচারপতি গভাই কিঞ্চিৎ আক্ষেপের সুরেই বলেন, ‘রাজ্য দীর্ঘ সময় ধরে কিছুই করেনি।’ এরপরে আবারও প্রশ্ন করেন, ‘রাজ্য কোনও একজন ব্যক্তির স্বার্থরক্ষার জন্য এত তৎপর কেন?’ রাজ্যের যুক্তিতে আদালত সন্তুষ্ট হতে না-পেরে তাদের আর্জি খারিজ করে। ফলে সন্দেশখালিতে জমি দখল ও নারী নির্যাতনের যাবতীয় মামলায় সিবিআই তদন্ত সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল থাকল।

    তবে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ যাতে কোনও ভাবেই অদূর ভবিষ্যতে এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত না করে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য এদিন নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ রেশন দুর্নীতি মামলায় গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে নিগ্রহের শিকার হয় আর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি। তারপর থেকেই শাহজাহান ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠতে থাকে। শাহজাহানকে ইতিমধ্যে সাসপেন্ডও করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

    এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসনকে নিশানা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, সেখানেই পরিষ্কার যে, সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাহিনী জমি দখল ও মহিলাদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। তারপরেও ওরা বারবার জনগণের করের টাকায় সুপ্রিম কোর্টে লড়তে যায় এবং সেখানে চড় খেয়ে চলে আসে!’

    তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘সুপ্রিম কোর্ট তো সিবিআই বলেই খালাস! সিবিআই যে নিরপেক্ষ তদন্ত করবে, তা সুনিশ্চিত হবে কীভাবে? আমরা আগে দেখেছি, কীভাবে সন্দেশখালির ভিডিয়ো সামনে এসেছে। ওই ভিডিয়োয় যে বিজেপি নেতাকে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে কি হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে সিবিআই?’
  • Link to this news (এই সময়)