• ফ্ল্যাট কিনে সমস্যায়? সুরাহায় গাইডলাইন
    এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
  • পশ্চিম বর্ধমানের এক বাসিন্দা স্থানীয় প্রোমোটারের থেকে ২০১৭ সালে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। সেই মর্মে প্রোমোটারের সঙ্গে তাঁর চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুয়ায়ী, ফ্ল্যাটের দাম ছিল ১৯,৫৯,৭৬১ টাকা। কিন্তু, ফ্ল্যাট হস্তান্তরের সময়ে তাঁর থেকে চাওয়া হয় ২১,২৪২৬০ টাকা। বুকিংয়ের ২৪ মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের কথা থাকলেও বাস্তবে তার দু’বছর পর হস্তান্তর করা হয়।ফ্ল্যাট পাওয়ার পর ক্রেতা দেখেন, ইলেকট্রিক মিটারবোর্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকঠাক নেই। টাকা নেওয়া সত্ত্বেও পার্কিং প্লেসও দেওয়া হয়নি। তাঁর মতোই ফ্ল্যাট কিনে প্রতারিতের তালিকা বেশ লম্বা রাজ্যে। দিনে দিনে আরও লম্বা হচ্ছে। ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে আগামী দিনে যাতে এ ভাবে আর কেউ প্রতারিত না হন, সে জন্যে এ বার প্রোমোটার, নির্মাণ-সংস্থাগুলির জন্যে গাইডলাইন আনতে চলেছে ক্রেতাসুরক্ষা ও উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর।

    রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই প্রোমোটার ও নির্মাণসংস্থার বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গ, বেশি টাকা দাবি, প্রতিশ্রুত সুযোগ-সুবিধার অভাব, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণের মতো অভিযোগ জমা পড়ছে ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরে। বিভাগীয় মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রর বক্তব্য, ‘কলকাতা বা লাগোয়া এলাকায় শুধু নয়, ছোট জেলা শহরেও ফ্ল্যাটের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। অভিযোগের বহরও বাড়ছে। কোনও ক্রেতা যাতে ফ্ল্যাট কিনে প্রতারিত না হন, তা নিশ্চিত করাই আমাদের টার্গেট।’

    সে জন্যেই গাইডলাইন। যা মেনে চলতে হবে প্রোমোটার, ডেভলপার, নির্মাণসংস্থাগুলিকে। অন্যথায় নেওয়া হবে ব্যবস্থা। গাইডলাইন মানা হচ্ছে কিনা, নজরদারি চালাবে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরও। এমনিতে পশ্চিমবঙ্গ ‘রেরা’ আইনে রাজ্যে ৩ কাঠার থেকে বড় জমি বা ৬টির বেশি ফ্ল্যাট নির্মাণের ক্ষেত্রে রেরা’য় প্রকল্পের নথিভুক্তি বাধ্যতামূলক হয়েছে। নথিভুক্তির সময়েই ডেভলপার সংস্থাকে জানাতে হয়, কত দিনে নির্মাণের কাজ শেষ হবে।

    যদি নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতা ফ্ল্যাট হাতে না পান, তা হলে তিনি রেরা’য় অভিযোগ জানাতে পারেন। ডেভলপার সংস্থাকে জরিমানা দিতে হয়। তবে রেরা আইন চালুর আগে যে সব প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল, সেগুলি এর আওতায় পড়ে না। একই সঙ্গে পাড়ায় যে সব ছোটখাটো ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলির প্রোমোটাররা রেরা’য় প্রকল্প নথিভুক্তই করান না বলে অভিযোগ।

    ফলে, ওই সব প্রকল্পে ক্রেতাদের হয়রানি বেশি। সে ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তের ভরসা একমাত্র ক্রেতাসুরক্ষা আদালত। ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের এক কর্তার কথায়, ‘ফ্ল্যাট সংক্রান্ত সমস্যার কথা কেউ জানালে তাঁকে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাই বলা হয়। তাতে অনেকে সুবিচারও পেয়েছেন। কিন্তু যেহেতু দীর্ঘসময় ধরে মামলা চলে তাই অনেকে এই পথে হাঁটতে চান না।’ নতুন গাইডলাইনে অনেকেই উপকৃত হবেন বলে মনে করেন আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ী।
  • Link to this news (এই সময়)