শহরে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধিতে বিরক্ত মমতা, প্রশ্নে CESC
এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
এই সময়: রাজ্যকে না জানিয়ে কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই মাশুল বৃদ্ধির কথা তাঁদের জানা ছিল না। বিষয়টি নিয়ে তিনি রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীকে সিইএসসি-র সঙ্গে কথা বলারও নির্দেশ দেন।চলতি মাসে সিইএসসি গ্রাহকদের যে বিল পাঠাচ্ছে, তাতে গড় মাশুল ৫.৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ৩০ জুন এ বিষয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল সংস্থাটি। এদিন নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে বর্ষায় বিদ্যুৎ নিয়ে সাবধানতা এবং সতর্কতা নিয়ে কিছু পরামর্শ দেন মমতা। ট্রান্সফর্মার বিকল হলে যাতে শিগগির তা মেরামত করা যায়, সেদিনে নজর দিতে বলেন তিনি।
এর পরেই তিনি বলেন, ‘কলকাতায় তো আবার আলাদা ব্যবস্থা। সেখানে অন্য সংস্থা। ফলে এই নিয়ম চলবে না।’ তার পরেই বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সিইএসসির সঙ্গে কথা বলে নাও। ওরা দাম বাড়িয়েছে শুনলাম, আমরা কিন্তু এটা জানতাম না। আমাদের রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ কিন্তু মাশুল বাড়ায়নি। অন্তত আমাদের সঙ্গে কথা বলে নেবে তো।’
কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কয়লার দাম বাড়লেই বিদ্যুৎ অবিলম্বে দামি হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বা কেনার খরচের পুরোটা যাতে বণ্টন সংস্থাগুলি সঙ্গে সঙ্গে তুলতে পারে, তা নিশ্চিত করতে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে নয়া বিধি কার্যকর করেছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক।
সেই বিধি অনুযায়ী, কোনও মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত কয়লা বা অন্য কোনও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বা কেনার খরচ বাড়লে, সেই বর্ধিত খরচ গ্রাহকদের কাছ থেকে দু’মাস পরের বিলে মাশুল বাবদ নিতে পারবে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। যদি কোনও কারণে তা না নিতে পারে, সে ক্ষেত্রে তারা তা পরে যে কোনও দিনই আদায় করতে পারবে।
গত বেশ কয়েক বছর সিইএসসি ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জ্বালানি খাতে বাড়তি খরচ অবিলম্বে গ্রাহকদের ঘাড়ে চাপায় না। বছর শেষে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে দাখিল করা অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স রিভিউতে তারা সেই খরচ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে মাশুল বাবদ উদ্ধার করার আবেদন জানায়।
কমিশন সেই আবেদন মঞ্জুর করলে তবেই তারা তা গ্রাহকদের থেকে নিতে পারে। সিইএসসি গ্রাহকদের পাঠানো বিলে জ্বালানি বাবদ বিদ্যুৎ কেনার বাড়তি খরচ উল্লেখ করা শুরু করলেও তা এতদিন তারা আদায় করেনি। চলতি মাসে সিইএসসি গ্রাহকদের যে বিল পাঠানো শুরু করেছে, সূত্রের খবর, এর ফলে সিইএসসি এলাকায় গ্রাহকদের গড় বিদ্যুৎ মাশুল ৫.৭% বাড়বে।
এত দিন সিইএসসি-র গড় বিদ্যুৎ মাশুল ছিল ইউনিট প্রতি ৭.৩১ টাকা। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে নিয়ামক সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন। ফলে, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কমিশনেরই নেওয়ার কথা।’
তাঁর সংযোজন, ‘কেন্দ্রীয় বিধি অগ্রাহ্য করলে আইনি সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় সিইএসসি জ্বালানির দাম বাড়ার জন্য বাড়তি খরচ গ্রাহকদের থেকে আদায় করা শুরু করেছে।’ যদিও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জ্বালানি খাতে বাড়তি খরচ গ্রাহকদের থেকে আদায় করছে না।