চোর সন্দেহে পুলিশের মারে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ, ঢোলাহাটে তুলকালাম
এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
চোর সন্দেহে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের মারধরেই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি মৃতের পরিবারের। মৃতের নাম আবু সিদ্দিক হালদার (২১)। প্রতিবাদে থানার সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ মৃতের পরিবারের সদস্যদের। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটে। গোটা ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।জানা গিয়েছে, কর্ণাটকে সোনার কাজ করতেন আবু সিদ্দিক হালদার। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০ জুন। অভিযোগ, ওই দিন ঢোলাহাটের ঘাটবকুলতলা গ্রামের বাসিন্দা আবু সিদ্দিক হালদারের কাকা মহসিন হালদারের বাড়ি থেকে সোনার গয়না চুরি হয়৷ এরপর সেই ঘটনায় ২ জুলাই পুলিশ মহসিন হালদার ও তাঁর ভাইপো আবু সিদ্দিককে ঢোলাহাট থানায় তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেখানে মহসিনকে দিয়ে ভাইপোর নামে জোর করে চুরির অভিযোগ দায়ের করানো হয় বলে দাবি। এরপর আবু সিদ্দিককে থানার মধ্যেই দফায় দফায় মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ৪ জুলাই কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় আবু সিদ্দিককে। সেদিন তাঁকে জামিন দেয় আদালত।
এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় আবু সিদ্দিককে মথুরাপুর ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। সোমবার রাত দশটা নাগাদ মৃত্যু হয় যুবকের। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার থানার সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন মৃতের কাকা মহসিন হালদার। তাঁর আরও দাবি, আসল চোরদের সামনে আনা হোক। একইসঙ্গে যে সমস্ত পুলিশ কর্মীরা তাঁর ভাইপোকে মারধর করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই বিষয়ে মহসিন বলেন, 'আমার বাড়িতে গ্রামেরই ২টি ছেলে চুরি করেছিল। পুলিশ এসে প্রথমে ওই দু'জনকে ধরে। তারা কী বলেছে জানি না। এরপর পুলিশ আমার ভাইপোকে (আবু সিদ্দিক হালদার) নিয়ে যায়। আমাকেও সঙ্গে নিয়ে গেল। থানায় আমার ভাইপোকে প্রচুর মারধর করে। ও প্রচণ্ড আহত হয়। আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি। পুলিশের লোক আমায় টাকা দেওয়ারও চেষ্টা করে। কিন্তু আমি নিইনি। আমরা চাই সিবিআই তদন্ত হোক। পুলিশের মারে একটা ছেলেকে কেন মরতে হল, তার জবাব চাই। ওই অফিসারের আইন অনুযায়ী শাস্তি চাই।' এদিকে ঘটনায় সুন্দরবনের পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, 'আদালতে পেশ করার সময় মেডিক্যাল কোনও সমস্যা ছিল না। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ।'