মোবাইল গেমে আসক্তি থেকে বড় বিপদ! কাঁথিতে মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রের
এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত অর্ঘ্য ভট্টাচার্য (১৮)। পড়াশোনার মাঝেই মোবাইল গেম খেলার নেশা হয়ে গিয়েছিল। নেশা এতটাই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, যে তার জন্য প্রয়োজন হয়ে পড়ে অর্থের। গেমের জন্য টাকা জোগাড় করতে না পেরেই দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে বলে দাবি পরিবারের। ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শেরপুর এলাকার বাসিন্দা ওই পড়ুয়া। অনলাইনে মোবাইলের গেম আসক্ত হয়ে টাকা জোগাড় করতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় সে বলে পরিবারের লোকজন দাবি করেছেন। অর্ঘ্য কাঁথি মডেল ইনস্টিটিউশনে দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। পরিবারের দাবি, অর্ঘ্য খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর শোকের ছায়া নেমেছে শেরপুর সহ কাঁথি মডেল ইনস্টিটিউশনে শিক্ষক থেকে ছাত্র মহলের।
জানা গিয়েছে, অর্ঘ্য ভট্টাচার্য বাবা-মা একমাত্র সন্তান। সাম্প্রতিক কয়েক মাস আগে বাবা মার কাছে মোবাইল কেনার জন্য বায়না ধরে অর্ঘ্য ভট্টাচার্য। ছেলের আবদার মেনে নিয়ে একটি দামি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল কিনে দেন পরিবার। তারপরেই অর্ঘ্য অনলাইনে মোবাইলে ‘ফ্রী- ফায়ার’ নামক একটি গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে।
মোবাইল কিনে দেওয়ার পর তেমনি পড়াশোনায় মন দিচ্ছিল না দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। অনলাইন গেম খেলার জন্য আর্থিক টাকা না পেয়ে আত্মহত্যা সিদ্ধান্ত নেয় অর্ঘ্য ভট্টাচার্য। সোমবার সকালে বাড়ির সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান পরিবারের লোকেরা। ঘটনার খবর পেয়ে কাঁথি থানা পুলিশকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
কাঁথি পুরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অতনু গিরি বলেন, ‘অনলাইনে মোবাইলে গেম খেলার জন্য এমনই পরিণতি। শুধু অর্ঘ্য নয় বেশ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবরা অনলাইনে গেমে আসক্ত হয়েছে৷’ কাঁথি থানায় আইসি প্রদীপ কুমার দান বলেন, ‘মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’ জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘কাঁথি থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বিষয়টি।’
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইলে অনলাইন গেম খেলার সময় কোনও অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কল করে কথা বলতে বলতে বাড়ির বাইরে গিয়েছিল অর্ঘ্য। যদিও এই ঘটনায় কতটা সত্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে কাঁথি থানার পুলিশ।