দেশের জার্সি গায়ে মায়ানমারে গোলের লক্ষ্যে জঙ্গলমহলের মৌসুমী
এই সময় | ০৯ জুলাই ২০২৪
খেলাধূলার জগতে বারেবারেই তাক লাগিয়েছে বাংলার মেয়েরা। ইনডোর হোক বা আউটডোর, বিভিন্ন খেলায় বিভিন্ন সময় জয়ের মুকুট উঠেছে রাজ্যের মেয়েদের মাথায়। শুধুমাত্র দেশেই নয়, দেশের বাইরে থেকেও এসেছে পুরস্কার। আর এবার জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বিদেশে পাড়ি বাংলার আরও এক তরুণীর।মায়ানমারে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মহিলা ফুটবল ম্যাচে দেশের জার্সি গায়ে লড়াইতে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের শালবনীর মৌসুমী মুর্মু। মাঠে দলের হয়ে রাইট ইউং সামলানোর দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। মোট দু'টি ম্যাচ রয়েছে তাঁর। জানা গিয়েছে, মৌসুমী মুর্মু বর্তমানে শালবনী থানায় সিভিক ভল্যান্টিয়ারের কাজ করেন। বাবা সুজিত মুর্মু পেশায় কৃষক এবং মা আরতি মুর্মু গৃহবধূ। দাদা সুব্রত মুর্মু বর্তমানে ইস্টবেঙ্গলে খেলছেন। ছোট থেকে ফুটবলের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয় মৌসুমীর। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই ফুটবল খেলা শুরু। অ্যাথলেটিক্সও করেছেন। তবে বেশি আকর্ষণ ছিল ফুটবলের প্রতি। সেই মতো শালবনীর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু স্টেডিয়ামে শালবনী জাগরণ ফুটবল অ্যাকাডেমিতে শুরু করেন অনুশীলন। নারায়ণ সিং ছিলেন তাঁর প্রথম কোচ। কঠিন প্র্যাকটিস ও স্কিলের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিুক মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছেন মৌসুমী।
মাঠে বল নিয়ে এগিয়ে চলেছেন মৌসুমী (ফাইল ছবি)
এই বিষয়ে মৌসুমী মুর্মু বলেন, 'খুবই ভালো লাগছে। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে মায়ানমারে এসেছি। আশা করছি আগামীদিনে সিনিয়র দলের হয়ে দেশের জার্সিতে অন্য দেশে গিয়ে খেলতে পারব।' এদিকে শালবনী জাগরণ ফুটবল অ্যাকাডেমির সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলেন, 'এই অ্যাকাডেমি তৈরির পর থেকে জঙ্গলমহলের অনেক প্রতিভা উঠে এসেছেন। বাংলার ও দেশের হয়ে অনেকেই মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ৩ বারের চ্যাম্পিয়ন দলের ৪৫ জন সদস্যা সিভিক ভল্যান্টিয়ার হিসেবে কর্মরত। মায়ানমারে খেলতে গিয়েছেন মৌসুমী। সেখানে তার পায়ের জাদু দেখিয়ে আসবেন, এটাই আশা।' অন্যদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সঞ্জিত তোরই বলেন, 'জঙ্গলমহলের অনেক প্রতিভা উঠে আসছেন। আভা খাটুয়া শট পুট ইভেন্টে প্যারিস অলিম্পিকে গিয়েছেন, আর মৌসুমী গিয়েছেন মায়ানমারে।'
উল্লেখ্য, বাংলায় খেলাধূলার উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলার ফুটবলকে। এমনকী স্পেনে রাজ্যের পক্ষ থেকে লা লিগার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়। বাংলার ফুটবলের প্রতি আগ্রহ দেখান লা লিগার কর্তারাও। রাজ্যের আশা আগামীদিনে আরও খেলোয়াড় উঠে আসবেন, যাঁরা বিশ্বের ফুটবল মানচিত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবেন।