আসন্ন উপনির্বাচনে শেষ দিনের প্রচারে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে ভোট প্রচারে নামলেন কলকাতা ময়দানের প্রাক্তন ফুটবলাররা। ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক কল্যানকে চাপে ফেলতে এই কৌশল কাজে আসবে বলেই মনে করছে তৃণমূল। যদিও কল্যাণ এই মিছিলকে বিশেষ পাত্তা দিতে চাইছেন না।তাঁর কথায়, 'রাজনীতিতে এটা খুবই স্বাভাবিক যে, সবরকমভাবে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করা হবে।' স্থানীয় বিজেপি নেতাদের পাল্টা যুক্তি, কোনও অস্ত্রই কাজে আসেনি দেখে সোমবার শেষ দিনের প্রচারে কিছু ফুটবলারকে মানিকতলায় নিয়ে এসেছে তৃণমূল। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হতে চলেছে। সোমবার শেষ দিনের প্রচারে তাই কোনও খামতি রাখেনি যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি।
উপ-নির্বাচন হচ্ছে বাংলার চারটি কেন্দ্রে-নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা, কলকাতার মানিকতলা এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। তবে মানিকতলার প্রচার-ই এদিন সবার নজর কাড়ে। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডের হয়ে প্রচারে নামেন প্রাক্তন ফুটবলাররা। সোমবার সকালে উল্টোডাঙা রেল স্টেশন থেকে হাতিবাগান স্টার থিয়েটার পর্যন্ত মিছিল হয়।
ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে এই রোড শো'তে অংশ নেন বিদেশ বসু, বিকাশ পাঁজি, গৌতম সরকার, মেহেতাব হোসেন, দীপেন্দু বিশ্বাস, কম্পটন দত্তর মতো কলকাতা ময়দানের আরও অনেক প্রাক্তন ফুটবলার। মিছিলে সামিল হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, অতীন ঘোষের মতো তৃণমূল নেতারাও।
মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের প্রচারে প্রাক্তন ফুটবলারদের সামিল হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, 'যিনি বিজেপির প্রার্থী, তিনি ভারতীয় ফুটবলকে পিছিয়ে দিয়েছেন। প্রি-বিশ্বকাপে আমরা কোয়ালিফাই করতে পারিনি।' মন্ত্রীর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, কল্যাণ চৌবের ফুটবলার স্বত্ত্বাকেই উপ-নির্বাচনে নিশানা করতে চলেছে তৃণমূল।
কারণ, বর্তমানে তিনি 'অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন'-এর সভাপতি। এদিন তৃণমূলের মিছিলে হাঁটা প্রাক্তন ফুটবলারদের আরও সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে নামার আহ্বান জানিয়ে কল্যাণ বলেন, 'স্বামী বিবেকান্দ বলেছিলেন, ফুটবল খেলে মানসিক দৃঢ়তা বাড়ে। আমি চাইব ওঁরা আরও সক্রিয় রাজনীতিতে আসুন। ফুটবল মাঠের মতো রাজনীতির মাঠেও মানসিক দৃঢ়তা দেখিয়ে রাজ্যে ঘটে চলা একের পর এক অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন।'
মানিকতলার তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডের কথায়, 'বিরোধী প্রার্থীকে আমি দুর্বল ভাবি না। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে আছেন। মানুষের ভালোবাসাও আছে।' রায়গঞ্জ, বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রেও শেষ দিনের প্রচার ছিল জমজমাট। সব দলের প্রার্থীরাই এদিন জোর দিয়েছিলেন বাড়ি বাড়ি প্রচারের উপর।
রায়গঞ্জের বিজেপি প্রার্থী মানস কুমার ঘোষের সমর্থনে একসঙ্গে মিছিলে হাঁটেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর সমর্থনেও এদিন মহামিছিল করে জোড়াফুল শিবির।