পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়ছে নাবালিকা বিয়ে, কাঁথি-৩ ব্লকেই এক বছরে ৬০০ জনের বিবাহ
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৯ জুলাই ২০২৪
শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে অনেকটাই এগিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। মাধ্যমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্যের দিক থেকে অন্যান্য জেলার থেকে প্রতিবারই অনেকটা এগিয়ে থাকে পূর্ব মেদিনীপুর। অথচ তথ্য বলছে, সেই পূর্ব মেদিনীপুরে বাল্যবিবাহ এবং নাবালিকাদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনা অন্যান্য জেলার থেকে কোনও অংশে কম নয়। সাম্প্রতিক সময়ে এই জেলায় মারাত্মকভাবে বাড়ছে এই ধরনের ঘটনা। বিশেষ করে কাঁথি ১ ও ৩ নম্বর ব্লক, পটাশপুর, চন্ডীপুর, খেজুরি, দেশপ্রাণ, রামনগর, এগরা এবং নন্দীগ্রাম এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই জায়গাগুলির মধ্যে কাঁথি-৩ ব্লকে এরকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে এ বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১৫-১৯ বছরের ৮৬৫ জন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এরমধ্যে নাবালিকা বা ১৮ বছরের নীচে বিয়ে হয়েছে ৬০০ জন মেয়ের। শুধু তাই নয়, নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বাও বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, চলতি আর্থিক বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রায় ৬০ নাবালিকা মেয়ে গর্ভবতী হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সংখ্যাটা সত্যিই ভয়ঙ্কর। যদিও নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত কুমার দেওয়ানের মতে, এবছর গত বছরের থেকে নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বার সংখ্যা কমেছে। জানা যাচ্ছে, শুধু গত মাসের শেষের দিকেই এই এলাকায় চারজন নাবালিকার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। তার মধ্যে তিনজনের বিয়ে আটকাতে পেরেছে প্রশাসন। আর একজনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
জেলা শিশু সুরক্ষা কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে এই এলাকাগুলিতে ২৯ টি থানায় নাবালিকা মেয়ের বিয়ের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে হলে সে ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। কারণ তাদের মধ্যে সেরকম জ্ঞান তৈরি হয় না। এরফলে মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
যদিও নাবালিকাদের বিয়ে ঠেকাতে রাজ্য সরকারের প্রকল্প রয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, এনিয়ে সচেতনতা প্রচার চলে। তারপরেও কেন এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদত থাক। সেই কারণেই এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে। তবে তৃণমূলের বক্তব্য, নাবালিকাদের বিয়ের সংখ্যা আগে থেকে অনেক কমেছে। স্কুলগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন।