পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন, আত্মসমর্পণ স্বামীর
বর্তমান | ১০ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: স্ত্রীর সঙ্গে অন্য যুবকের অবৈধ সর্ম্পক আছে– এই সন্দেহে স্ত্রীকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। পরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ওই ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে, উলুবেড়িয়া রেল স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে। মৃত বধূর নাম মীনা পণ্ডিত (৪০)। বাড়ি রাজাপুর থানার কমলাচক গ্রামে। মৃতার স্বামী রবীন ভাঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে উলুবেড়িয়া জিআরপি। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিস ১০৩ (১) বিএনএস ধারায় মামলা রুজু করেছে। ধৃতকে মঙ্গলবার উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক সাতদিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন। জিআরপি মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন মীনা এবং রবীন। দুজনেই বিবাহিত। দীর্ঘদিন ধরেই দু’জনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পকের জেরে বছর আট আগে দু’জনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে তাঁরা কমলাচক খালপাড়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। মাস চারেক আগে চোখে অস্ত্রোপচার হয় পেশায় রাঁধুনি রবীনের। ফলে তিনি রান্নার কাজে যেতে পারছিলেন না। তাই মীনা রবীনের সহকারী এক যুবকের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় রান্নার কাজে যেতেন। এরপরই ওই যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর অবৈধ সর্ম্পক আছে বলে রবীন সন্দেহ করতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হওয়ায় মাস দেড়েক আগে মীনা বাণীবনে তাঁর বাপের বাড়িতে চলে আসেন। রবীনও তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে চলে যান।
এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, এরপরেও দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সোমবার রাতে মীনাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে উলুবেড়িয়া স্টেশনে নিয়ে আসেন রবীন। পরে স্টেশনের বাইরের রাস্তা দিয়ে দু’জনে হাঁটা শুরু করেন। সূত্রের খবর, তখন রবীন ও মীনার মধ্যে ফের অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে একটি নির্জন জায়গায় রবীন মীনার গলায় বস্তার দড়ি পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। পরে মৃতদেহটি ঝোপের মধ্যে ফেলে রেখে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে চলে যান। পরে মঙ্গলবার সকালে রাজাপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন রবীন। এদিন আদালতে যাওয়ার সময় রবীন নিজের দোষ স্বীকার করে জানান, স্ত্রীর অবৈধ সর্ম্পক মেনে নিতে না পেরে রাগের মাথায় এই কাজ করে ফেলেছেন।