পিএইচডি ভর্তি তালিকায় দুর্নীতি! উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল যাদবপুর
প্রতিদিন | ১০ জুলাই ২০২৪
রমেন দাস: ফের উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে ঘিরে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের একাংশের। অভিযোগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পিএইচডি (PHD) কোর্সে ভর্তি সংক্রান্ত তালিকায় ‘বেনিয়ম’ হয়েছে। নিয়ম না মেনেই ভর্তি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরিচিত মুখ, প্রাক্তন এসএফআই (SFI) নেতাকে নিয়মবিরুদ্ধভাবে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে ওই তালিকায়। আর সেই অভিযোগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র সংগঠনের তরফে অরবিন্দ ভবনে উপাচার্যকে ঘিরে প্রতিবাদ চলছে। মঙ্গলবার রাতের এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ।
এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) উপাচার্য অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্ত ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে জানান, ”ছাত্রদের একাংশ অবস্থান বিক্ষোভ করছে। আমি ওদের কথা শুনছি। এই মুহূর্তে আর কিছু বলার অবস্থায় আমি নেই।” অন্যদিকে বিক্ষোভরত ছাত্রদের দাবি, বারবার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পিএইচডি ভর্তি তালিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর সেই বিষয়ে তদন্তের কথা থাকলেও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। দাবি, কোনও কিছুকে তোয়াক্কা না করেই কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার ফের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানেও রয়েছে পুরনো গলদ!
অভিযোগ, ২০২৩ এবং ২০২৪, এই দু’বছরেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের (International Relations) পিএইচডি ভর্তি তালিকায় ওই প্রাক্তন এসএফআই (SFI Leader) নেতার নাম দেখা যায়! তিনি যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। দাবি করা হয়, শুধুমাত্র প্রভাব বিস্তার করেই পিএইচডির সুযোগ পেয়েছেন ওই ব্যক্তি। এরপর নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট কমিটি গঠন করা হয় বলেও দাবি। কিন্তু সেসবের মধ্যেই ফের একই বিভাগে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম তালিকায় থাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর তরফে অভিযুক্ত ওই প্রাক্তন এসএফআই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমি জরুরি কাজে ব্যস্ত রয়েছি। এই মুহূর্তে এই বিষয়ে কিছু বলব না। পরে যোগাযোগ করুন।”
এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এসএফআই নেত্রী তমোলিনা ঘোষ ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এ জানান, ভারতের ছাত্র ফেডারেশন শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্ত রকম দুর্নীতির বিরোধীতা করে এবং করবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি সংক্রান্ত দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠে এসেছে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতের ছাত্র ফেডারেশন প্রথম দিন থেকে দাবি করেছে এই অভিযোগের ভিত্তিতে অতি দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং এই গোটা ঘটনাটা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। কিন্তু বহু টালবাহানা করার পর দেখা যায় এই তদন্ত প্রক্রিয়া এখনো পর্যন্ত এগোয়নি, সেই কারণে আজ আমরা আবার ভিসির কাছে যাই এবং তাঁকে তিন দিন সময় দিয়ে এই গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য। আর এখানে দুটো জিনিস বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে বারংবার তার নাম এসএফআইয়ের সাথে যুক্ত করা হলেও তিনি কোনভাবেই বর্তমানে সংগঠনের সাথে যুক্ত নন। সংগঠন এরকম কোন দুর্নীতিযুক্ত প্রবণতাকে সমর্থন করে না।”