প্রার্থীর কাছে প্রেস্টিজের লড়াই। দলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। হোক উপনির্বাচন, এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয় ঘাসফুল শিবির। রানাঘাট লোকসভা ভোটে হারের 'বদলা' নিতে মাঠে নামানো হয়েছে প্রবীণ নেতা শঙ্কর সিংহকে। বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মী বৈঠকের পরে কেন লোকসভা ভোটে দলকে হারতে হলো, মতুয়াদের একটা অংশ কেন মুখ ঘোরালো, সেই উত্তর খুঁজেছেন তিনি।তারপর খামতি পূরণে নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। শুধু শঙ্করকে মাঠে ফেরানোই নয়, বুথস্তরের সংগঠন মজবুত করার কৌশলে অভিজ্ঞ কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকেও এই ভোটে বিশেষ নজরদারির দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। দলের প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী তাই বলছেন, '২০২১ সালের ভোটে এই কেন্দ্রে আমি জিতেছিলাম ১৬,৫১৫ ভোটের ব্যবধানে। এ বার আরও বেশি ভোটে জিতব। নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে কেন্দ্রীয় সরকার যে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন চালু করেছে, বুঝে গিয়েছেন মতুয়া সমাজের মানুষ। তাই মতুয়া ভোট আমাদের সঙ্গেই থাকবে।'
মাত্র একমাস আগে লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের কাছে ৩৬, ৯৩৬ ভোটে পিছিয়েছিলেন 'দলবদলু' তৃণমূলের মুকুটমণি। সেই রেজাল্ট নিয়ে বিজেপি শিবির এখনও উল্লসিত। এ দিকে বিজেপি প্রার্থী মনোজ বিশ্বাস কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির বাসিন্দা বলে তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। 'বহিরাগত' প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে গেরুয়া শিবিরে।
মনোজ অবশ্য বলেছেন, 'আমি অনেকদিন ধরে রানাঘাট দক্ষিণ জেলায় দলের ইনচার্জ। গত পঞ্চায়েত, লোকসভা ভোটে আমি সাংগঠনিক ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করেছি। এলাকা হাতের তালুর মতো চেনা। অনায়াসে জিতব। কোনও ক্ষোভ নেই।' এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের কোনও প্রার্থী নেই। জোট ধর্ম পালন করতে গিয়ে সিপিএম প্রার্থী, পেশায় শিক্ষক অরিন্দম বিশ্বাসকে সমর্থন করেছে তারা।
প্রায় তিন লক্ষ ভোটারের এই কেন্দ্রে ৪০ শতাংশ মতুয়া ভোট। লোকসভার নিরিখে এই বিধানসভা এলাকার ১৪টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৩টিতেই পিছিয়ে তৃণমূল। কুপার্স পুরসভা এলাকার ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতেও ফল খারাপ হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের। ফলে লোকসভা ভোটে হারার পরে নিজের ছেড়ে যাওয়া আসনে ফের জিততে না পারলে মতুয়া সংগঠনের নেতা ও চিকিৎসক মুকুটমণির রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও প্রশ্নের মুখে পড়বে। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।