আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা কে? এই নিয়ে বিবাদের জেরে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে। রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা কে, তা এখনও স্থির হয়নি এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা মিজান হাসানের ঘরে তালা লাগিয়ে দেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস আলি। পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে এসে তৃণমূল সদস্যদের নজরে ঘটনাটি পড়তেই তাঁরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পঞ্চায়েত সমিতির সামনে অবস্থান -ধর্নাতে বসে পড়েন তৃণমূলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। পরে ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রানিনগর-২ ব্লকের বিডিও-র হস্তক্ষেপে বিকেলে নিজের ঘর ফিরে পেয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা মিজান হাসান। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ২৭ আসন বিশিষ্ট রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৩ টি আসন থেকে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থীরা। অন্যদিকে কংগ্রেস জয়ী হয় ন'টি আসন থেকে এবং বাম প্রার্থীরা জেতেন পাঁচটি আসন থেকে। এরপর বাম-কংগ্রেস জোটের তরফ থেকে কংগ্রেসের কুদ্দুস আলি ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তবে পঞ্চায়েত সমিতির ন'টি স্থায়ী সমিতি বর্তমানে তৃণমূলের দখলে রয়েছে। রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা মিজান হাসান বলেন, 'গত এক বছর আগে দলের তরফ থেকে আমাকে এই পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা করা হয়েছে এবং সেই চিঠি পঞ্চায়েত সমিতিতে জমাও করা হয়েছে। তারপর থেকে গত এক বছর ধরে আমি নিয়মিত বিরোধী দলনেতা হিসেবে পঞ্চায়েত সমিতির, স্থায়ী সমিতির সমস্ত বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য চিঠিও পেয়েছি এবং যোগদানও করেছি।' তিনি বলেন, 'আজ সকালে এসে দেখি আমার ঘরের দরজাতে তালা লাগানো রয়েছে এবং আমার ঘরের সামনে লাগানো নেমপ্লেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার পাশাপাশি আমার ঘরে রাখা বেশ কিছু দরকারি কাগজপত্র চুরি করা হয়েছে। গোটা ঘটনাটি হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্দেশে।' অন্যদিকে রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুশ আলি দাবি করেন, 'রানীনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৩ টি আসন থেকে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ন'টিতে কংগ্রেস এবং পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থীরা। একটি পঞ্চায়েত সমিতিতে সর্বাধিক আসন পেয়ে কীভাবে তাঁরা বিরোধী দল নেতার পদ দাবি করছেন সেই বিষয়ে আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের জেলা শাসককে ই-মেলের মাধ্যমে চিঠি দিয়েছি। বিরোধী দলনেতা তৈরি করার মূল কারিগর এসডিও এবং বিডিও। ওই ব্যক্তিকে প্রশাসনিক আধিকারিকরা বিরোধী দলনেতার তকমা দিয়ে কোনও চিঠি রয়েছে বলে আমার জানা নেই।' জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, আপাতত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মিজান হাসানকেই তাঁর নিজের পুরনো ঘরটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।