গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সেমেস্টারে ফেল ৯৭%, মাথায় হাত পড়ুয়াদের
এই সময় | ১০ জুলাই ২০২৪
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে প্রথম সেমেস্টারে ৯৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী ফেল! এই ফলাফল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, তাঁদের সিলেবাস জানানো হয়নি। ঠিকমতো ক্লাস হয়নি এবং খাতাও ঠিকভাবে দেখা হয়নি। যদিও যাবতীয় দাবি খারিজ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই একটি 'রেজাল্ট রিভিজিট কমিটি' তৈরি করেছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এই কমিটি।ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ প্রথম সেমেস্টারের জন্য কোনও সিলেবাস ছিল না তাদের। অধ্যাপকরাও ক্লাসে অনিমিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রিনি খাতুন বলেন, 'আমরা কিছু বুঝতে পারছি না কী হল! আমরা লিখে এসেছিলাম। আমাদের সিলেবাস ছিল না। ক্লাস ঠিকমতো হত না। কিন্তু, আমরা উত্তর লিখেছিলাম। আমার মনে হয় স্যারেরা ঠিকমতো খাতা দেখেননি। ৯৭ শতাংশই ফেল! আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে।' বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র সিধু মণ্ডল বলেন, 'আমাদের ঠিক মতো ক্লাস হত না। ঠিকমতো নম্বর দেওয়া হয়নি।'
এদিকে এই ফলাফলের জন্য রাজ্য সরকারের শিক্ষা পরিকাঠামোকে দুষেছেন বিজেপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। তিনি বলেন, 'এই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে জানাব। '
পালটা মালদা জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, 'বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। কেন্দ্র সরকার প্রতিটি রাজ্যকে ন্যাশানাল এডুকেশন পলিশি মানতে বাধ্য করেছে। অল্প সময়ের জন্য তা চালু হওয়ার জন্য পড়ুয়াদের অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। এক শতাংশ অধ্যাপক রয়েছেন যাঁরা বাম জমানাতেও ফাঁকি দিতেন, এখনও ফাঁকি দেন। আমাদের দাবি, ঠিকমতো ক্লাস নিতে হবে এবং সিলেবাস শেষ করতে হবে। এই দাবিতেই আমরা ডেপুটেশনও দিয়েছি।'
এদিকে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শক্তিপদ পাত্র বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয় বিদ্যালয় তৈরি হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে । যদি নতুন সিলেবাস হয় এবং তা কলেজে পড়ানো সম্ভব হয় না সেই সময় প্রশ্নকর্তাদের সেভাবে প্রশ্ন করতে হবে।' পড়ুয়াদের সমস্ত বক্তব্য অমূলক বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বিশ্বরূপ সরকার বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি রেজাল্ট রিভিজিট কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তারা আমাদের খুব শীঘ্রই রিপোর্ট দেবে।' পাশাপাশি খাতা দেখা হয়নি, এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সিলেবাসও অনেক আগে থেকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান বিশ্বরূপ সরকার। তিনি বলেন, 'যথেষ্ট আগে আমরা সিলেবাস দিয়েছি। কোনওটা হয়তো গত বছর অগাস্ট মাসে, কোনওটা হয়তো তারও আগে। অগাস্টের পর কোনও কলেজে নতুন করে কোনও সিলেবাস পাঠানো হয়নি।'