মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের পর কাজের বার্তা! বর্ষায় জমা জল ঠেকাতে রাজ্যের পাশে রেল
প্রতিদিন | ১০ জুলাই ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার: বর্ষার জমা জল নিষ্কাষণে রাজ্যকে সবরকমভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত রেল। নিকাশি নালা থেকে ঝিল সংস্কার, কোনও কাজেই তারা আপত্তি জানাবে না। মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকার সঙ্গে বৈঠকে সেকথা জানিয়ে দিলেন রেল-কর্তারা। সংস্কারের অভাবে হাওড়ার দু’টি নিকাশি খাল রানিঝিল এবং সাঁতরাগাছি ঝিল জল টেনে বের করতে পারছে না। রাজ্যের অভিযোগ ছিল, রেলের সহযোগিতার অভাবেই সংস্কারের কাজ এগোয়নি। যে কারণে অল্প বৃষ্টিতেও জলমগ্ন হয়ে পড়ে হাওড়া। যা নিয়ে সোমবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রেলের এলাকায় জল জমে থাকে। তা পরিষ্কার হয় না। আর সেই জমা জলে ডেঙ্গুর মশা জন্মায়। তাই মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দেন রাজ্য প্রশাসনকে। অবশেষে সেই জট কেটেছে।
পূর্ব রেলের (Eastern Railway) তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে যেখানে জল জমে, নিকাশি সংস্কার হয়নি, পলি জমে রয়েছে, সেই সব জায়গা সংস্কার করতে রাজ্যকে সবরকমভাবে তারা সাহায্য করতে প্রস্তুত। এতদিন পুরকর্তাদের অভিযোগ ছিল, জল ফেলার ব্যাপারে রেলের তরফে তাঁদের কাছে কোনও চিঠি বা বার্তা দেওয়া হয় না। উলটে পুরকর্মীরা রেললাইনের কাছে কাজ করতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়৷ অভিযোগ এর আগে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছি-শালিমার টার্মিনালের লাইন সম্প্রসারণের জন্য রেলের নয়ানজুলি মাটি ফেলে বোজানো হয়েছে। পুরসভার অভিযোগ, ইতিমধ্যেই নয়ানজুলির প্রায় এক-চতুর্থাংশ বুজে তো গিয়েছেই। পাশাপাশি, সাঁতরাগাছি (Satragachhi) সেতুর নিচের ঝিলটির জল বেরনোর জন্য যে দু’টি পাইপলাইন ছিল, সেগুলিও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাটি চাপা পড়ে। ফলে নিকাশির নোংরা জল উপচে গিয়ে ঢুকে পড়ে ৪৪, ৪৫, ৪৭ এবং ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলিতে।
এসব নানা সমস্যা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী সোমবার নবান্নের (Nabanna) বৈঠকে উষ্মাপ্রকাশ করেন। বৈঠক চলাকালীনই মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee) পুরমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কেন পরিস্থিতির বদল হয়নি? পুরমন্ত্রী ফিরহাদ মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, একটি পরিকল্পনা করে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছিল। তিন বছর ধরে সেটি পড়ে রয়েছে। এমনকী, রেল কর্তৃপক্ষও তাদের এলাকায় পলি তোলার কাজ করছে না। ফলে, সমস্যা থেকে যাচ্ছে। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এর পরেই মুখ্যসচিবকে (Chief Secretary) নির্দেশ দেন, মঙ্গলবারই রেলের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান করতে হবে। নবান্নে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রীও। নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠক ফলপ্রসূ।
রেল জানিয়েছে, এর পর সবদিক থকেই তাঁরা সাহায্য করবে। প্রতি বছর একটু বেশি বৃষ্টি হলেই হাওড়ার (Howrah) রেল ইয়ার্ডে জল জমে যায়। লোকাল ট্রেনের (Local Train) পাশাপাশি মেল অথবা এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় এর জেরে। এই সমস্যার সমাধান এখনও অধরা। এর পাশাপাশি শহরে চলা মেট্রো প্রকল্পের কাজের কারণে সিমেন্ট-বালি জমেও শহরের নিকাশি নালা বুজে যাচ্ছে। ফলে শহরেও জল জমছে। মেট্রোকেও এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। ডিআরএম হাওড়া (DRM, Howrah)সঞ্জীব কুমার বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যকে জানিয়েছি রানিঝিল সংস্কারের কাজ তাঁরা করতে পারে। আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’