আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাওয়ার পথে জাতীয় সড়ক থেকে চম্পট কুখ্যাত 'চোর' বাসুদেব মণ্ডল ওরফে তস্কর। মঙ্গলবার বাগুইআটি থানার পুলিশ চুরির মামলায় তাকে বারাসত আদালতে পেশ করে। আদালত তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এরপরেই বাসুদেবকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে।
পথে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের আমড়া এলাকায় একটি পেট্রল পাম্প থেকে পালিয়ে যায় সে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাসুদেব শৌচাগারে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু, সেই কারণে গাড়ি থামতেই সুযোগ বুঝে সে পালিয়ে যায়।এই প্রসঙ্গে বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমন দীপ জানান, এই বাসুদেবের বাড়ি হুগলির আকাতপুরে। চুরির মামলায় তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় বারাসত আদালত। কিন্তু, বর্ধমান জেলে তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় শৌচালয়ে যাওয়ার নাম করে সে পালিয়ে যায়। তার খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে।
উল্লেখ্য, জামালপুর থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় চুরির 'মাস্টারমাইন্ড' এই বাসুদেব, অভিযোগ এমনটাই। তার গ্রেফতারির পর জিজ্ঞাসাবাদে চুরি যাওয়া একাধিক সামগ্রী উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। সোমবার তাকে প্রথমে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেখানে তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার বাগুইআটি থানার পুলিশ পুলিশ হেফাজত চেয়ে বারাসত আদালতে আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায় এবং বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর তাকে বর্ধমান সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
এই বাসুদেব ওরফে তস্করের 'কেরামতি কাহিনী' নেহাত কম নয়। চুরি করার পর এলাকা ছেড়ে যেতে বেশ পটু সে। শুধু হুগলি নয়, আশেপাশের একাধিক জেলায় সিঁধ কাটার রেকর্ড আছে তার।
তদন্তে বাসুদেবের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, বহু মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এই বাসুদেবের। আর বিভিন্ন সময় প্রেমিকারা আবদার করতেন তার থেকে। আর তাদের সেই চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিতে চুরিতে সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠে সে। চুরির আগে এলাকার খুঁটিনাটি ছকে নিত সে।
কী ভাবে সেখানে ঢুকবে, তার থেকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত কী ভাবে সেখান থেকে বার হবে সেই বিষয়ে। এরপরেই পরিকল্পনা করে সিঁধ কাটত সে। তার গ্রেফতারির পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। এবার সেই বাসুদেবই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি জারি পুলিশের।