অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া মধ্য হাওড়ায় (Howrah)। তিব্বতি বাবা লেনে একটি দোতলা বাড়ি থেকে বৃদ্ধার পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হল। যাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, বুধবার সকালে ওই বাড়িটি থেকে তীব্র পচা গন্ধ বেরচ্ছিল। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বাড়ির সদর দরজা খোলা। আর বাড়ির ভিতর একটি ঘরে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই বৃদ্ধা। তাঁর মৃতদেহটি পচেগলে গিয়েছে। আর বাড়ির দোতলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে রয়েছেন মানসিকভাবে অসুস্থ বৃদ্ধার মেয়ে। মানসিকভাবে অসুস্থ মেয়ে বুঝতেই পারেননি, একতলার ঘরে মা মারা গিয়েছেন ও তাঁর দেহ পচেগলে গিয়েছে। বিষয়টি দেখে স্থানীয়রাই খবর দেন চ্যাটার্জিহাট থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ২ থেকে ৩ দিন আগে মিনতি মুখোপাধ্যায় নামে বছর সত্তরের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু (Death) হয়েছে বলে অনুমান। তবে মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বৃদ্ধার পরিবারের এক সদস্য জানালেন, ৮ নম্বর তিব্বতিবাবা লেনের বাড়িতে স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মিনতিদেবী। কয়েকবছর আগে ওই মহিলার স্বামী দিলীপ মুখোপাধ্যায় মারা যান। তিনি রাজ্য সরকারি সংস্থায় কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার (Engineer) ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পেনশনের টাকায় দিন কাটছিল মা ও মেয়ের।
কিন্তু মেয়ে কাকলি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিকভাবে অসুস্থ। একই ঘরে একসঙ্গে থাকলেও মানসিকভাবে অসুস্থ মেয়ে বুঝতে পারেননি যে মা কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছেন। দেহ পচে যাওয়ার পর দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দেখতে বাড়ির গৃহকর্ত্রীর দেহ একটি ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পচন ধরা দেহ থেকে রক্ত রস বেরিয়ে মেঝে ভিজে গিয়েছে। পিন্টু মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, ‘‘গন্ধ পেয়ে আমরাই বাড়িতে ঢুকি। তার পর পুলিশকে খবর দিই।’’ বৃদ্ধার মেয়ে কাকলিকেও চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।