স্বচ্ছ ভারত মিশনে অনেক পিছিয়ে জেলা ঢিমেতালে চলছে মডেল ভিলেজ গড়ার কাজ
বর্তমান | ১১ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: স্বচ্ছ ভারত মিশনের কাজে পিছিয়ে রয়েছে নদীয়া জেলার সিংহভাগ ব্লক। যদিও সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু গ্রে ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট কিংবা শৌচালয় তৈরির কাজে অনেকটাই পিছিয়ে জেলা। ব্লকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকলেও সেই টাকার ব্যবহার হচ্ছে না। যার ফলে মডেল গ্রাম তৈরির কাজও চলছে ঢিমেতালে। নদীয়া জেলায় এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৯৭টি গ্রামকে মডেল ভিলিজ ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে নদীয়া জেলায় মডেল ভিলিজ তৈরির টার্গেট রয়েছে ১২৬৪টি। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, নদীয়া জেলায় একটি মডেল ভিলেজ নেই, এমন একাধিক ব্লক রয়েছে। সম্প্রতি এই নিয়ে জেলাস্তরে বৈঠক হয়েছে। যেখানে সমস্ত ব্লকের বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ডাকা হয়েছিল। যেখানে ব্লকগুলোকে এই কাজে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফ থেকে।
নদীয়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, গ্রাউন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট সহ বিভিন্ন কাজে ব্লকগুলো পিছিয়ে রয়েছে। তাঁদের দ্রুত এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্বচ্ছ ভারত মিশনের কাজ ধাপে ধাপে হয়ে থাকে। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, গ্রাউন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, শৌচালয় তৈরি সহ বিভিন্ন ধাপে এই কাজ করা হয়। এই সমস্ত কাজে কোনও গ্রামে সম্পূর্ণ হয়ে গেলে তবেই তাকে মডেল ভিলেজের শংসাপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু এই জিডব্লুএম, এসডব্লিউএম কাজের জন্য জমি পেতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। যার ফলে মডেল ভিলেজ তৈরি কাজও পিছিয়ে যাচ্ছে। নদীয়া জেলায় এই সকল কাজের জন্য প্রায় ১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা রয়েছে। যার প্রায় ৬০ শতাংশ টাকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কাজে খরচ হয়ে গিয়েছে। টাকা খরচের নিরিখে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে রানাঘাট-১ নম্বর ব্লক। যেখানে টাকা খরচের পরিমাণ শূন্য শতাংশ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাউন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের জন্য নদীয়া জেলায় ১৮১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার কাজ করার টার্গেট রয়েছে। যার মধ্যে ১০৯ কোটি টাকার কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে জেলাজুড়ে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, জেলায় এখনও পর্যন্ত ৫১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই জিডব্লুএম কাজে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে চাকদহ, কল্যাণী, শান্তিপুর ও রানাঘাট-১ নম্বর ব্লক। যেখানে যথাক্রমে মাত্র ১২ শতাংশ, ১৩ শতাংশ, ২৫ শতাংশ ও ২৮ শতাংশ কাজ হয়েছে। সেদিক থেকে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে প্রশাসনকে। নদীয়া জেলার ১৮৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই এই কাজ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যার মধ্যে ১১২টি পঞ্চায়েতে এসডব্লিউএম কাজের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এর মধ্যে ৬৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এসডব্লিউএম কাজ শেষ হলেও তা সক্রিয় রয়েছে মাত্র ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর-২, কল্যাণী ও কালীগঞ্জ ব্লকে এই প্রকল্পের কাজ বেশ কিছু পঞ্চায়েতে শেষ হলেও তা এখনও চালু করা যায়নি। একই অবস্থা শৌচালয় তৈরির কাজেও। নদীয়া জেলায় এখনও পর্যন্ত ৯৪৭টি বাড়িতেই শৌচালয় তৈরি করা গিয়েছে। যেখানে ৯ হাজার ৩৮২টি বাড়িতে শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। নাকশিপাড়ার ধনঞ্জয়পুরে পিএইচই কাজের জন্য পাইপ বদল। বারবার খোঁড়াখুড়িতে কাদা জমে তিন কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা।-নিজস্ব চিত্র