ফুলবাড়ি-ঘোষপুকুর বাইপাস ভেঙে চৌচির টোল নিলেও সংস্কার না করায় প্রশ্ন
বর্তমান | ১১ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: ফুলবাড়ি-ঘোষপুকুর বাইপাসের টোল গেট থেকে বছরে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। টোল গেট থেকে টাকা আদায় করলেও দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তা মেরামত করছে না এসজেডিএ। ফুলবাড়ি পেট্রল পাম্পের পাশেই টোল গেট থেকে মহনন্দা ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তায় বহুদিন থেকেই বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। বর্ষায় এই রাস্তা দিয়ে ভারী পণ্যবাহী লরি বিপজ্জনকভাবে চলাচল করছে। যেকোনও সময় উল্টে গিয়ে বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। সম্প্রতি বালি-পাথর ফেলে গর্ত ভরাট করা হলেও রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়েই আছে।
এই রাস্তার পাশেই ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের ফোর লেন। দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ফুলবাড়ি মোড় দিয়ে ঘুরে ছোট গাড়ি, বাইক স্কুটার চলাচল করে। কিন্তু, এলাকাবাসী ও লরি চালকদের প্রশ্ন, যে রাস্তা থেকে বছরে কোটি কোটি টাকা উপার্জন হয় সেই রাস্তা কেন এসজেডিএ মেরামত করছে না। ফোর লেন দিয়ে যাতায়াত করতে গেলে অনেকটা ঘুরে যেতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে লরি চালক ও এলাকার মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।
রাস্তার এই পরিস্থিতির মাঝে চেয়ারম্যান অপসারণ করার পর এসজেডিএ ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে সংশ্লিষ্ট রাস্তা ও টোল গেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই দ্রুত রাস্তা ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না স্থানীয়রা। এলাকায় গুঞ্জন, ফোর লেন হয়ে গিয়েছে। এখানে টোল গেট আর এসজেডিএ’র অধীনে থাকবে না। কেন্দ্রীয় সরকার টোল গেট দেখবে। এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের ২০৩০ সাল পর্যন্ত এই টোল গেটের চুক্তি রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের ফোর লেনের পুরো কাজ সম্পন্ন করার চুক্তি রয়েছে কেন্দ্রের এজেন্সির। তাই এসজেডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি নেন তার উপর এই রাস্তা ও টোল গেটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
কলকাতা, বিহার সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা পণ্যবাহী লরি ফুলবাড়ি-ঘোষপুকুর বাইপাস দিয়ে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, অসমের দিকে যায়। তাতে ফুলবাড়ি টোল গেট দিয়ে যাতায়াতের জন্য টাকা দিতে হয়। এতে প্রতিদিন প্রচুর টাকা সংগ্রহ হয়। পাশের ফোর লেনের কাজ শেষ হয়ে গেলে এই বাইপাস ও টোল গেট গুরুত্ব হারাবে।
এই পরিস্থিতিতে জমিকাণ্ডে ফুলবাড়ির বহিষ্কৃত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবাশিস প্রামাণিক গ্রেপ্তার হওয়ায় টোল গেট নিয়ে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কলকাতার একটি সংস্থা টেন্ডারে এসজেডিএ’র থেকে এই টোল গেটের বরাত পেয়েছে। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাদাগিরিতে ওই এজেন্সিকে বাড়তি কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছে টোলগেটে। যাদের একটি অংশ কাজ না করেই মাসের পর মাস বেতন নিয়ে যাচ্ছে।
এই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অভিজিৎ শিবালের কাছে জানাতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এনিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, চেয়ারম্যান অপসারণের পর এসজেডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে এখানকার আধিকারিক থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মী সকলেই চাপে রয়েছেন। তাই কেউই কোথাও কোনও মন্তব্য করছেন না। নিজস্ব চিত্র