নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: রাস্তজুড়ে খানাখন্দ। শহরের কোথাও কোথাও তা বোজানো হয়েছে সিমেন্ট দিয়ে। পিচ রাস্তার উপর সিমেন্টের আস্তরণ দেখে চোখ কপালে উঠেছে বাসিন্দাদের। এই দৃশ্য হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার। একে বর্ষার মুখে রাস্তা সারাইয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তার উপরে পিচের রাস্তায় সিমেন্টের তাপ্পি দেওয়াকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। চুঁচুড়া পুরসভার কর্মকাণ্ড ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পুরকর্তারাও বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তবে তাঁদের সাফাই, লোকসভা নির্বাচনের কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আম জনতার করের টাকা বাঁচাতেই পিচের রাস্তায় সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে।
চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবীণ তৃণমূল নেতা অমিত রায় বলেন, লোকসভা নির্বাচনের জন্য টাকা খরচে নিষেধাজ্ঞা ছিল। যে কারণে, বর্ষার প্রাক্কালে রাস্তা মেরামত করা যায়নি। তারপর রথ সহ একাধিক উৎসব থাকায় নাগরিক মহল থেকেই রাস্তা সারানোর দাবি উঠেছিল। বাসিন্দাদের করের টাকা আমরা অপচয় করতে চাইনি। বর্ষায় পিচ দিয়ে রাস্তা করলে তা মজবুত হতো না। সেইজন্য সিমেন্ট দিয়ে কম খরচে তাপ্পি দেওয়া হয়েছে। বর্ষা মিটে গেলে আমরা রাস্তা মজবুত করব। গত লোকসভা ভোটে সিপিএম প্রার্থী তথা জেলার নেতা মনোদীপ ঘোষ বলেন, ভোটের জন্য রাস্তা সংস্কারের কাজ আটকে থাকে না। নির্বাচনের বিধিতে একথা বলা নেই। তাছাড়া আগে থেকে কাজ অনুমোদন করে রাখার সুযোগ আইনে আছে। হয় পুরকর্তারা আইন জানেন না, অথবা নাগরিকদের প্রতি দায়িত্ব অস্বীকার করছেন। বাসিন্দারাই পুরসভার এই কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিচার করবেন তাঁরাই।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই চুঁচুড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাসিন্দারা। খাদিনা মোড় থেকে ঘড়িমোড় পর্যন্ত শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি খানাখন্দে ভরে গিয়েছিল। তোলা ফটক সহ একাধিক জায়গা কার্যত যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে উঠেছিল। শহর থেকে গঙ্গার ধার হয়ে চন্দননগরমুখী রাস্তাও ছিল বেহাল। ঘড়িমোড় থেকে জেলা পরিষদমুখী রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে সমস্যায় পড়ছিলেন বাসিন্দারা।
সম্প্রতি কিছু এলাকায় সেইসব রাস্তা সারাই কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজেই পিচের রাস্তার উপর সিমেন্টের তাপ্পি দেওয়ার জেরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ঘড়িমোড়ের দিকে যাওয়ার পথে দয়াময়ী কালীমন্দিরের পরে একাধিক জায়গায় সিমেন্টের তাপ্পি দেওয়া হয়েছে। আবার, পিপুলপাতি থেকে পুরসভার পিছন দিকে যে রাস্তা গিয়েছে, সেখানেও পড়েছে সিমেন্টের আস্তরণ। শহরজুড়ে এমন সিমেন্টের আস্তরণ পিচ রাস্তার চেহারাই বদলে দিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষার অনেক আগেই রাস্তা সারাই করা উচিত ছিল। এমনিতেই বারবার রাস্তা খুঁড়ে হয় পাইপলাইন, না হয় টেলিফোন কিংবা বিদ্যুতের লাইনের কাজ করা হয়। এসব নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা এড়াতে গিয়ে পিচ রাস্তায় সিমেন্টের আস্তরণ নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।