• মাওবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ, ডোমজুড়ের ডাকাতিতে ২ ধৃতের মাথার দাম ৩ লক্ষ! 
    বর্তমান | ১১ জুলাই ২০২৪
  • দীপন ঘোষাল, হাওড়া: ডোমজুড়ের দুঃসাহসিক ডাকাতিকাণ্ডে ইতিমধ্যেই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে হাওড়া পুলিসের গোয়েন্দা ও বিহার এসটিএফ’এর যৌথ দল। তবে অভিযানে পাকড়াও হওয়া ডাকাত দলটির মাথা রবীন্দ্র ও তার এক সঙ্গী মনীষকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। স্রেফ ডাকাতি নয়, দুজনের পিছনে রয়েছে মাওবাদী কার্যকলাপের পোক্ত ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’। তাই সেখানকার পুলিস মোটা অঙ্কের ‘মাথার দাম’ও ধার্য করেছিল দুজনের জন্য।


    ডাকাতদলটির মাথা রবীন্দ্র সাহানিকে আগেই গ্রেপ্তার করেছেন গোয়েন্দারা। তখনই গোটা কর্মকাণ্ডের পিছনে এক রহস্যময়ী মহিলার যোগ খুঁজে পান তদন্তকারীরা। বিশেষ অপরাধমূলক কাজের ইতিহাস না থাকায় সেই মহিলা, যার আসল নাম আশাদেবী ওরফে চাচিকে চিহ্নিত করতে বেশ কিছুটা সময়ও লেগে যায়। আপাতত তাঁদের অনুমান, এত বড় ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে চাচির সক্রিয়তা প্রথমবার। যদিও পরে চাচি নামের সেই ‘রহস্যময়ী’কে জালে পুরে ফেলেন তদন্তকারীরা। এই মহিলাই যেহেতু  দুষ্কৃতীদের ‘শেল্টার’ দেওয়ার কাজ করেছিল, তাই বাকিদের সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিল সে। তাই বাকি অভিযুক্তদের নাগালে পেতে বেশি সময় লাগেনি। শেল্টার দেওয়া ছাড়াও টার্গেটে রেকি, ডাকাতির পর পালানোর ব্যবস্থা করা সহ আরও একগুচ্ছ কাজ করেছিল এই চাচিই। ইতিমধ্যেই রবীন্দ্র এবং চাচি ছাড়াও বিকাশ কুমার ঝা, অলোক পাঠক এবং মণীশ মাহাতকে গ্রেপ্তার করেছে অভিযানকারী যৌথ দলটি। তাদের তদন্তেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা গিয়েছে, রবীন্দ্র এবং মণীশের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র গোটা  পঞ্চাশেক ডাকাতির কেসই নয়, রয়েছে পোক্ত মাওবাদী কার্যকলাপের ইতিহাস। অর্থাৎ বিহার-ঝাড়খন্ড এলাকায় মাওবাদী কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ যোগ ছিল তাদের। সরকারবিরোধী বেশ কিছু কাজে হাত পাকিয়েছিল এই দু’জন।  তদন্তকারী দলের এক কর্তা বলেন, দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে মণীশ এবং রবীন্দ্রর বিরুদ্ধে। ফলে ডাকাতি ছাড়াও এই ‘হিস্ট্রি সিটার’দের অতীতটাও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তদন্তেই আমরা জানতে পেরেছি, ৩ লক্ষ টাকা মোটা মাথার দাম ধার্য করা হয়েছিল তাদের। এই সবকিছুর মাঝেও দাপটের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি চালাচ্ছিল তারা। যাদের মূল টার্গেটই ছিল, সুবোধ সিংয়ের মতোই সোনা! 


    পুলিস সূত্রের খবর, গ্রেপ্তারিতে সাফল্য হলেও ডাকাতির মাল এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আপাতত সেই লক্ষ্যেই তদন্ত এগচ্ছে। বিহার অভিযানের সময়তেই জানা গিয়েছে, ডাকাতির মালপত্র থেকে কিছু চোরাই সোনা ইতিমধ্যেই বিক্রি করা হয়েছে। যারা সেই সোনা কিনেছিল, তাদের খোঁজ করছেন গোয়েন্দারা। আপাতত পালিয়ে বেড়াচ্ছে লুটের সোনার সেই ক্রেতারা। তদন্তকারীদের দাবি, ক্রেতাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা গেলে, সেটা তদন্ত প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যোগসূত্রের কাজ করবে।  তবে আপাতত ধৃতদের জেরা করে ডাকাতি রহস্য উদ্ঘাটনেই জোর দিচ্ছেন  হাওড়া পুলিসের গোয়েন্দারা।
  • Link to this news (বর্তমান)