সঙ্গীতকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরিক্ষা অবিরত চলছে। শুধু যে সাত সুর নিয়ে ভাঙাগড়ার খেলা চলছে এমনটা নয়, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ও সেগুলির বাজানোর পদ্ধতি নিয়েও নিত্যনতুন গবেষণা করে চলেছেন অনেকে। তাঁদেরই একজন পূর্ব মেদিনীপরে মহিষাদলের বাসিন্দা চয়ন চক্রবর্তী। মাউথ অর্গান বাজানোর ক্ষেত্রে নতুন এক দিশা দেখিয়েছেন তিনি। শুধু মুখ দিয়ে নয়, নাক দিয়েও মাউথ অর্গান বাজিয়ে তাক লাগিয়ে গিয়েছেন সবাইকে। শুধু তাই নয়, নাক দিয়ে একটানা ১২ ঘণ্টা মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাম তুলে নিয়েছেন লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে।মাউথ অর্গান শিল্পী চয়ন চক্রবর্তী জানান, প্রায় ২৫ বছর ধরে মাউথ অর্গান বাজাচ্ছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে বাজনায় হাতেখড়ি। ১৩-১৪ বছর বয়সেই হাতে তুলে নেন মাউথ অর্গান। তারপর থেকে এই মাউথ অর্গানকেই করে নেন সঙ্গের সঙ্গী। হাওড়ায় শৈবাল সেন নামে এক ব্যক্তির শুরু হয় শিক্ষা। তারপর থেকে লাগাতার চলেছে বাজনা। সঙ্গীতের প্রতি চয়নের আগ্রহ দেখে, বাড়ির সদস্যরাও বারেবারেই উৎসাহিত করেছেন তাঁকে।
শিক্ষা ও অনুশীলন বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু একটা সময় হঠাৎই চয়নের মনে হয়, মুখের মতো নাক দিয়েও তো শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া যায়। তাহলে নাক দিয়ে কেন মাউথ অর্গান বাজান যাবে না? যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। শুরু করেন নাক দিয়ে প্র্যাকটিস। যদিও সাফল্য প্রথম দিকে আসেনি। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি। লাগাতর নাক দিয়েই প্র্যাকটিস চালিয়ে গিয়েছেন। অনুশীলন যত বাড়তে থাকে ততই রপ্ত হতে থাকে নাকের মাধ্যমে মাউথ অর্গান বাজনা। একটা সময় লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের বিষয়টি জানতে পারেন। যোগাযোগও হয় লিমকা বুক অফ রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। এরপর ২০০৮ সালের অগাস্ট মাসে একদিন একটানা ১২ ঘণ্টা বাড়িয়ে রেকর্ড গড়েন চয়ন।
বর্তমানে মাউথ অর্গান শিল্পী হিসেবে যথেষ্টই পরিচিত চয়ন চক্রবর্তী। বিভিন্ন জায়াগায় অনুষ্ঠানও করেন। অনুষ্ঠানে মূলত মুখ দিয়ে মাউথ অর্গান বাজালেও, শ্রোতা ও দর্শকদের অনুরোধ রাখতে নাক দিয়েও বাজিয়ে শোনাতে হয়। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মাউথ অর্গানের শিক্ষাও দেন চয়ন। এক্ষেত্রে শুধু স্থানীয় স্তরেই নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্য, এমনকী বিদেশেও প্রচুর ছাত্র ছাত্রী রয়েছে তাঁর। প্রতিদিনই অনলাইনে চলে ক্লাস। এভাবেই নিজের সুর আগামী প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন চয়ন চক্রবর্তী।