• উন্নয়নের কাজ বন্ধ! টেন্ডার না করায় হারুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে 'শোকজ' করলেন বিডিও ...
    আজকাল | ১১ জুলাই ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক : পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রায় এক বছর পার হতে চললেও বাম-কংগ্রেস-বিজেপি পরিচালিত মুর্শিদাবাদে সুতি-১ ব্লকের হারুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে উন্নয়নের কোনও কাজই হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নকে বাধা দেওয়ার জন্য জোট পরিচালিত এই পঞ্চায়েতে কোনও কাজ হচ্ছে না। ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে গোটা বিষয়টি স্থানীয় বিডিও এবং জেলাশাসকের নজরে আনা হয়েছে।

    পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য টেন্ডার না করায় ইতিমধ্যে হারুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে 'শোকজ' করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুতি-১ ব্লকের বিডিও অরূপ সাহা। তিনি বলেন," ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের টাকা এখনও না এলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সমস্ত প্রধানকে বলা হয়েছে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য টেন্ডার করতে হবে। প্রয়োজনীয় অর্থ হাতে এলেই সেই টাকা বিলি হবে। কিন্তু ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সরকারি নির্দেশ মেনে এখনও কোনও টেন্ডার ডাকেননি। তাই তাঁকে 'শোকজ' করা হয়েছে।"

    গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৬ শাসন বিশিষ্ট হারুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেস ১২ টি আসনে জয়ী হয়। অন্যদিকে কংগ্রেস প্রার্থীরা জেতেন আটটি আসন থেকে। সিপিএম তিনটি আসনে, আরএসপি একটি আসন এবং বিজেপি প্রার্থীরা দুটি আসন থেকে জয়ী হন। এরপর কংগ্রেসের রাখি রবিদাস প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন।

    অভিযোগ প্রধান পদে বসার পর থেকে কোনও কাজই করেনি জোট পরিচালিত এই পঞ্চায়েত। হারুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা ঐ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রেজাউল করিম বলেন," পঞ্চায়েত প্রধান এই এলাকায় উন্নয়নের কোনও কাজই করছেন না। তার ফলে ডায়না, শোভারঘাট, গোলাবাড়ি, রবিদাসপাড়া ,ডাঙাপাড়া সহ আরও একাধিক এলাকায় রাস্তাঘাট একদম ভেঙে গেছে। গ্রামের মসজিদ এবং মাদ্রাসায় যাওয়ার রাস্তা পুরোপুরি ভেঙে যাওয়াতে স্থানীয় মানুষ অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন।"

    ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আনসারুল হক বলেন,"প্রধানের উদাসীনতার জন্য এই পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় বছরখানেক ধরে নিকাশী নালা পরিষ্কার হয় না। তার ফলে বর্ষাকালে পুকুর এবং নর্দমার জল সব রাস্তার উপর উঠে এসেছে। মানুষ বুঝতেই পারছে না কোথায় রাস্তা রয়েছে আর কোথায় নর্দমা বা ডোবা রয়েছে। হারুয়া হাই স্কুলে যাওয়ার রাস্তাটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝেমধ্যেই ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যাওয়ার সময় পড়ে যাচ্ছে। নোংরা জল পেরিয়ে মসজিদে যেতে হচ্ছে বলে অনেকেই আর সেখানে যেতে পারছেন না।"

    পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা বলেন," ২০২৪ সালে জানুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত প্রধান একটিও টেন্ডার ডাকেননি। পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা 'রেজুলেশন' পাশ করে সেই অনুযায়ী প্রধানকে কাজ করতে বললেও তা তিনি মানতে রাজি হননি। তার ফলে এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ মানুষের দুর্দশা কবে দূর হবে আমাদের জানা নেই।"

    যদিও হারুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস দলনেতা আব্দুল লতিফ এবং ওই পঞ্চায়েতের প্রধান রাখি রবিদাস দাবি করেন,"এই পঞ্চায়েতকে বদনাম করার জন্য কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রেনের মুখ বন্ধ করে রাখছেন। তার ফলে সেই জল রাস্তাতে উঠে আসছে। তবে আমরা পঞ্চায়েত দখল করার পর ইতিমধ্যে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। সরকার থেকে অর্থ না পেলেও ইতিমধ্যে আমরা নিজেদের উদ্যোগে বহু ড্রেন পরিস্কার করেছি এবং একাধিক রাস্তা নির্মাণ করেছি।"
  • Link to this news (আজকাল)