• পরনে সাদামাটা শাড়ি, কপালে টিপ, মাথায় সিঁদুর! একাই চালান আস্ত এক ডাকাতদল...
    ২৪ ঘন্টা | ১১ জুলাই ২০২৪
  • পিয়ালি মিত্র: পরনে সাদামাটা শাড়ি। কপালে টিপ। মাথায় সিঁদুর। আপাতভাবে দেখলে মনে হবে ছাপোষা কোনও পরিবারের গৃহবধূ। দেখলে বোঝার উপায় নেই আপাত নিরীহ দেখতে ৪৯ বছরের 'চাচি' ডাকাতির মতো কোনও অপরাধের আগে রেইকি করা থেকে দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়া, অপরাধে ব্যবহারে জন্য গাড়ি জোগাড় করা থেকে লুঠের সামগ্রী কোন পথে পাচার হবে - সেই যাবতীয় কাজ সুক্ষভাবে অর্গানাইজ করত। প্রতি ডাকাতিতে ভাগ  ৬-১০ লক্ষ টাকা! 

    আসল নাম আশা দেবী। বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। হাওড়ার ডোমজুড়ে ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বিহারের বেগুসরাই থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে হাওড়া জেলা পুলিস। বিহার এসটিএফের সঙ্গে চালানো এই যৌথ অভিযানে ধরা পড়েছে আরও একজন। এর আগে এই ঘটনায় সুবোধি সিং ঘনিষ্ঠ এবং ডোমজুড় ডাকাতির মূল চক্রী রবীন্দ্র সাহানী-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তারা এই মুহূর্তে বিহারের একটি মামলাতে হেফাজতে রয়েছে। 

    পুলিস সূত্রের খবর, আগে সুবোধের দলেই ছিল সাহানী। পরে নিজে আলাদা দল তৈরি করে। ডোমজুরের ডাকাতির বেশ কিছুদিন আগে এ রাজ্যে আসে আশা দেবী ওরফে চাচি। এক আত্মীয়র মাধ্যমে আসানসোলের একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। সেখান থেকেই তিনটে চোরাই বাইক কেনে ডাকাতির জন্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এরপর ডেকে পাঠায় ডাকাতদলটি। তার ফোন পেয়ে বিহার থেকে একে একে এসে পৌঁছয় রবীন্দ্র সাহানী, বিকাশ কুমার ঝা, মনীষ কুমার মাহাতো - অলোক কুমার পাঠক। বেশির ভাগই সমস্তিপুরের বাসিন্দা। চাচীর ভাড়া নেওয়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে গ্যাং।

    এরপর চাচি হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে চলে আসে। কিছুদিন সেখানে থেকে নিশানায় থাকা সোনার দোকানের রেইকি করে চাচি। সব কিছু প্ল্যান মোতাবেক হওয়ায় চাচির থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে ডাকাতির দিন কয়েক আগে অঙ্কুরহাটিতে পৌঁছে যায় রবীন্দ্র,বিকাশরা। সাজানো ব্লু প্রিন্ট অনু্যায়ী গত জুন মাসে ডোমজুরে সোনার দোকানে গুলি চালিয়ে ডাকাতি করে পালায়। চাচির ভূমিকা এখানে শেষ নয়। লুঠের পর সোনা কোন পথে, কার মাধ্যমে বিহারে পৌঁছানো, লুঠের পর কোথায় যাবে সেই নির্দেশ দিয়ে দেয়।

    বিহারে কোন পথে সোনা পৌঁছাবে সে সবও ঠিক করে দিত চাচি। হাওড়া সিটি পুলিসের কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, ডাকাতির ঘটনায় সাহায্যের জন্য ৬-১০ লক্ষ টাকা পেতেন চাচি। বৃহস্পতিবার চাচি-সহ দুজনকে হাওড়া নিয়ে এসে আদালতে পেশ করা হয়। তাদের জেরা করে তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন এখানকার আর কোন মামলাতে জড়িত তারা। পুলিস জানতে পেরেছে লুঠের সোনা কিছু সোনার দোকানে বিক্রি করা হত। সেই সোনার হদিস পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিস।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)