বাবুল হক, মালদহ: কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে তদন্তকারী সরকারি কর্মীকে দিতে হবে কাটমানি! তা না দেওয়ায় বিপাকে মালদহের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সরকারি নথিতে তাকে বিবাহিত উল্লেখ করে ‘কন্যাশ্রী’র ফর্ম বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় দেড় বছর ধরে এনিয়ে পঞ্চায়েত ও ব্লক দপ্তরের ঘোরাঘুরি করেও কোনও সুরাহা হয়নি বলেই দাবি। অবশেষে বিডিও’র দ্বারস্থ সে। বিডিও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারি কর্মীর গাফিলতি প্রমাণিত হলে তাঁকে ফল ভুগতে হবে।
মালদহের রতুয়া নম্বর ব্লকের চাঁদমনি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের বোমপাল গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তাঁর মেয়ে সুলতানা পারভিন স্থানীয় বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। দেড় বছর আগে সুলতানার বয়স ১৮ বছর হয়ে যায়। নিয়মমতো সে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের কে-২ ফর্ম পূরণ করে। মাদ্রাসার তরফে সেই ফর্ম ভেরিফিকেশন করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতে। সুলতানার দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখার কথা ওই পঞ্চায়েতের সহায়ক শান্তনু দাসের। তাঁর রিপোর্টের ভিত্তিতেই ব্লক থেকে নাম পাঠানো হবে জেলায়। অভিযোগ, সুলতানার ফর্ম অনুমোদন করে ব্লকে পাঠাতে ঘুষ দাবি করেছিলেন শান্তনু। সেই দাবি না মানায় তিনি তাঁর রিপোর্টে সুলতানাকে বিবাহিত বলে উল্লেখ করেন। এর জেরে সুলতানার ফর্ম বাতিল হয়ে যায়৷
সুলতানা বলেন, “আমার একাধিক বান্ধবী কে-২ ফর্ম জমা করেছিল। ওদের সবার ভেরিফিকেশন হয়ে গেলেও আমার হয়নি৷ আমি শান্তনুবাবুর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি আমার কাছে টাকা দাবি করেন। আমি টাকা না দেওয়ায় তিনি আমার ফর্ম ব্লকে পাঠাননি। দেড় বছর ধরে পঞ্চায়েত আর ব্লক দপ্তর ঘুরে ঘুরে শেষ পর্যন্ত আমার মামা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পঞ্চায়েত থেকে আমাকে বিবাহিত বলে রিপোর্ট পাঠানোয় আমার ফর্ম বাতিল হয়ে গিয়েছে। এনিয়ে আমি বিডিওকে অভিযোগ জানিয়েছি।” বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আনওয়ারুল হক জানান, “মেয়েটির কাছে সব শুনে আমি নিজে পঞ্চায়েত সহায়ক শান্তনুবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি। কেন ওকে বিবাহিত দেখানো হল জানতে চাই৷ কোনও সদুত্তর না পেয়ে বিষয়টি আমি ব্লক অফিসের নোডাল অফিসার প্রসেনজিৎ সরকারকেও জানাই।” এনিয়ে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সহায়ক মন্তব্য করতে রাজি না হলেও বিডিও রাকেশ টোপ্পো জানিয়েছেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে৷”