• বাবার দোকান ভাঙায় কেঁদে ভাসিয়েছিল দুই মেয়ে, সেই হকারের পাশে প্রশাসন
    এই সময় | ১১ জুলাই ২০২৪
  • সরকারি জমির উপর বেআইনিভাবে দোকান চালাচ্ছিলেন বীরভূমের রাজু দাস। বিষয়টি নজরে আসার পরেই আইন মেনে সেই দোকান সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু, রাজুর দুই মেয়ে বাবার সেই ভাঙা দোকান দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। মনভার নিয়ে রাজু যখন বলেছিলেন, 'এবার চুরিই করব', সেই সময় বাবার গলা জড়িয়ে চিৎকার করে 'না' বলে উঠেছিল দ্বিতীয় শ্রেণির খুদে। 'চুরি ভালো কাজ নয়', অপরিণত মন পরিণত শিক্ষা দিয়েছিল। এই ভিডিয়ো মনভার করেছিল নেটিজেনদের। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রাজুর জন্য বিকল্প রুজির কথা ভাবা হচ্ছে বলেও জানিয়েছিলেন প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।এই ঘটনার পর মাঝে বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফেও আশ্বাস গিয়েছে রাজুর কাছে। ওই ব্যবসায়ী বলেন, 'দিন কয়েক আগে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মহকুমা শাসক। তাঁরা বলেছিলেন যেখানে আমার দোকান ছিল সেখানে একটি ঠেলাগাড়ি নিয়ে খাবারের দোকান শুরু করতে। তা শুরু করার জন্য তাঁরাই খরচ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।'

    প্রশাসনিক আশ্বাস মিললেও নতুন ব্যবসা করার জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। রাজু এই সময় ডিজিটালকে বলেন, 'নর্দমার সামনে ঠেলাগাড়়িতে খাবার বিক্রি করতে একটি অসুবিধা হবে। নর্দমার দুর্গন্ধ এবং বর্ষাকালের নর্দমার জল উঠে গেলে সমস্যা দেখা দেবে। অন্য কোনও দোকান ভাড়া নিয়ে চালানোর ইচ্ছে থাকলেও তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। কারণ ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা ভাড়া হাঁকাচ্ছেন অনেকেই। প্রত্যেক মাসে এই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসন আমাকে আশ্বাস দিয়েছে। তবে এখন আমি কী করব নিজেই বুঝতে পারছি না।'

    অন্যদিকে, বোলপুরের মহাকুমা শাসক অয়ন নাথ বলেন, 'রাজুবাবু আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। ওঁকে ঠেলা গাড়ি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে তিনি তাতে রাজি হননি। আমি ওঁর ফোন নম্বর এবং ঠিকানা নিয়ে রেখেছি। ওঁর বাড়িতে আমি লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এরপর যা করণীয় করব। ওঁর দুই সন্তান রয়েছে। তাঁদের টিউশন বা পড়াশোনার বিষয়টিও আমার মাথায় রয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য করা হবে।'

    উল্লেখ্য, সরকারি জমিগুলিকে বেআইনি দখল মুক্ত করার জন্য কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। এই ধরনের বেআইনি নির্মাণ কোনওভাবেই মেনে যাবে না এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • Link to this news (এই সময়)