সংবাদদাতা, ডোমকল: টিফিনের শেষে সবেমাত্র ক্লাসরুমে ঢুকেছিল পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কেউ কেউ তখনও বারান্দায় দাঁড়িয়ে। এমন সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত। আচমকা বজ্রাঘাতে স্কুলের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে যায় বহু ছাত্রছাত্রী। অনেকে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডোমকলের ভগীরথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। এদিন বিকেল পর্যন্ত ২৩জনকে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও তাদের মধ্যে কারও অবস্থা সঙ্কটজনক নয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে ছাত্রছাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পেয়ে উদগ্রীব হয়ে অভিভাবকরা হাসপাতালে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান ডোমকলের মহকুমা শাসক, বিডিও, এসডিপিও সহ মহকুমার প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোমকলের বাটিকামারি, ফতেপুর, ভগীরথপুর, কালুদিয়াড়, শাহবাজপুর সহ আশেপাশের বহু গ্রামের পড়ুয়া ওই স্কুলে পড়ে। এদিন টিফিনের সময় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর টিফিন শেষে ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই স্কুলের মধ্যে একটি গাছে বজ্রপাত হয় বলে অনুমান। বজ্রপাতের বিকট শব্দে একতলা ও দোতলায় শ্রেণিকক্ষে থাকা ছাত্রছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেকেই সেই শব্দে ও বিদ্যুতের ঝলকানিতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির বেশি ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়। তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অসুস্থদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। যদিও তারা সকলেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে বলে হাসাপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছাত্রী শ্রাবণী খাতুন, ফাতেমা খাতুন, খুশবু খাতুন বলে, বৃষ্টি হচ্ছিল। আমরা সবাই ক্লাসরুমে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দের সঙ্গে চারিদিকে আলোর ঝলকানি দেখতে পাই। তাতেই আমরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ি। এখনও খুব ভয় লাগছে।
পড়ুয়াদের অভিভাবক ইলিয়াস হক, তাপস মণ্ডল বলেন, আমরা বাড়িতে কাজ করছিলাম। খবর পাই, স্কুলে বাজ পড়ে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির মধ্যেই ভিজতে ভিজতে হাসপাতালে গিয়ে দেখি, আমার মেয়ে সহ অনেকেই অসুস্থ হয়ে ভর্তি রয়েছে। তবে, আগের থেকে মেয়ের অবস্থা অনেকটাই ভালো।
স্কুলের টিআইসি সেলিম রেজা বলেন, টিফিন শেষে সবে ক্লাস ঢুকেছিল ছাত্রীরা। তখনই ওই ঘটনা ঘটে। আমরা পড়ুয়াদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তারা সবাই এখন সুস্থ আছে, এটাই স্বস্তিজনক। ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সৌরভ শীল বলেন, বিকেল পর্যন্ত ২৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে সকলেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছে। কারও অবস্থা সঙ্কটজনক নয়। চিকিৎসকরা নজরে রেখেছেন। ডোমকলের বিডিও পলাশ সরকার বলেন, খবর শোনামাত্র আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই সুস্থ আছে।