বিজেপি বনাম বিজেপি যুদ্ধ, রাস্তার কাজ বন্ধ নন্দীগ্রামে
বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, নন্দীগ্রাম: বিজেপি বনাম বিজেপি দ্বন্দ্বে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল-২ পঞ্চায়েতে রাস্তার কাজ বন্ধ হল। খালপাড় থেকে মাটি কাটা নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। বৃহস্পতিবার বিজেপি পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান চন্দ্রকান্ত মণ্ডল লোকজন নিয়ে গিয়ে মাটি কাটার কাজে বাধা দেন। ওয়ার্কঅর্ডার পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ রাখে। ব্লক প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত করে। তারপর বিডিও সুপ্রতীম আচার্য ঠিকাদার সংস্থাকে শোকজ করেন। খালপাড় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই পঞ্চায়েতের অধীন মধ্য আসদতলায় ১৭৫মিটার ঢালাই রাস্তার কাজ হাতে নিয়েছে বিজেপি পরিচালিত নন্দীগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে এজন্য আট লক্ষ ৯৮হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বীণাপানি সঙ্ঘ থেকে পরেশ দাসের বাড়ি পর্যন্ত ওই রাস্তায় ৭০মিটার পাইলিংয়ের কাজ হবে। সেই পাইলিংয়ের জন্য ঠিকাদার সংস্থা স্থানীয় আসদতলা খালপাড় থেকে মাটি কাটা শুরু করেছিল। বিজেপির জেলা কমিটির সহ সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সদস্য পবিত্র কর পার্টির পক্ষ থেকে ওই কাজে তদ্বিরের দায়িত্বে আছেন। বুধবার পবিত্র সহ কয়েকজন পার্টিকর্মী ওই ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়ে খালপাড় দেখে আসেন। তারপরই সেখানে মাটি কাটা শুরু হয়।
মাটি কাটার খবর পেয়ে বুধবারই আসদতলায় যান উপপ্রধান চন্দ্রকান্ত মণ্ডল। সেখানে ঠিকাদারের সঙ্গে তাঁর বাকবিতণ্ডা হয়। শুধু তাই নয়, ওই ঠিকাদার উপপ্রধানকে চ্যালেঞ্জ করেন বলে চন্দ্রকান্তের অভিযোগ। এরপর বৃহস্পতিবার লোকজন জড়ো করে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি পবিত্র ও তাঁর সঙ্গীসাথীদের টার্গেট করেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা ওই বিজেপি নেতা। চন্দ্রকান্ত অবৈধভাবে মাটি কাটার প্রতিবাদ করে বিডিওকেও নালিশ করেন। তারপরই প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত হয়। সেইসঙ্গে ঠিকাদার সংস্থাকে শোকজ করা হয়।
নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে বিজেপির জেলা সহ সভাপতি পবিত্র করের সঙ্গে চন্দ্রকান্ত মণ্ডলের সংঘাত সকলের জানা। প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি চন্দ্রকান্ত এবং পবিত্র একই দলের দুই মেরুতে অবস্থান করেন। পবিত্র আগে বয়াল-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান ছিলেন। তারপর দলবদলু নেতার হাত ধরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এই মুহূর্তে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে মেঘনাদ পালের মতো নন্দীগ্রাম-২ব্লকেও পবিত্রই দলের প্রধান মুখ। দলবদলু দুই নেতার গুরুত্ববৃদ্ধিই এই সংঘাতের মূল কারণ।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান চন্দ্রকান্ত মণ্ডল বলেন, অবৈধভাবে খালপাড় থেকে মাটি কাটা হচ্ছিল। এনিয়ে বাধা দিতে ঠিকাদার আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। পবিত্র কর কয়েকজন ঠিকাদারের সঙ্গে এই এলাকায় এসে মাটি কাটার জন্য দেখে গিয়েছেন। তারপরই বুধবার থেকে মাটি কাটা শুরু হয়। ঠিকাদার কোথা থেকে মাটি আনবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু, এই এলাকা থেকে আমরা মাটি কাটতে দেব না। ঠিকাদার এজন্য কাউকে টাকা পয়সা দিয়েছেন কিনা জানা নেই। আমরা কোনও অবস্থায় খালপাড় থেকে মাটি কাটতে দেব না।
বিজেপির জেলা সহ সভাপতি পবিত্র কর বলেন, আসদতলার মাটি কেটে ঠিকাদার ঠিক করেননি। কয়েকজন মাটি কেটে নেওয়ার প্রতিবাদ করেছেন। ব্লক প্রশাসনও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে। আমরা ঠিকাদারকে ওই এলাকা থেকে মাটি কাটার কথা বলিনি। নন্দীগ্রাম-২ বিডিও বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর এনকোয়ারি করেছি। অভিযোগের সত্যতা থাকায় ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়েছে।