• জলের লাইনে এবার মিটার বসাচ্ছে পুরসভা
    বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাট শহরে অপচয় রুখতে এবার জলের লাইনে বসবে মিটার। বৃহস্পতিবার যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে শহরবাসীর জন্য মেগা জলপ্রকল্পের ঘোষণার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত। তবে ফ্লো মিটার বসানো হলেও জল কর বসানোর কোনও পরিকল্পনা নেই বলে পরিষ্কার জানানো হয়েছে। 


    বহু বছর ধরে শহরে পানীয় জল সরবরাহে পুরসভার অন্যতম ভরসা উচ্চক্ষমতার পাম্প হাউস। মাটির তলার জল তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ১৮টি ওয়ার্ডে সরবরাহ করা হয়। দু’বেলা জল সরবরাহ করা হলেও অধিকাংশ ওয়ার্ডে পুরসভার সরবরাহ করা জল কম পরিমাণে পাচ্ছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। কোথাও আবার পুরসভার পাইপ লাইনের সঙ্গে পাম্প সংযোগ করে জল চুরি করা হচ্ছে। ফলে পাশের বাড়িগুলিতে সরু সুতোর মতো জল পড়ছে। ফি বছর গ্রীষ্মে পানীয় জল নিয়ে কার্যত হাহাকার শুরু হয়। যতদিন যাচ্ছে, ততই শহরে পানীয় জলের হাহাকার বাড়ছে। শহরবাসীর অভিযোগ, অসহনীয় গরমে যা জল মেলে তাতে চাহিদা পূরণ হয় না। এদিকে দিনদিন মাটির নীচে জলস্তর কমছে। ফলে বহু বাড়ির পাম্পে জল উঠছে না। এছাড়া প্রচুর জল অপচয়েরও অভিযোগ ওঠে। বাড়িতে পাম্পে জল তুলে নেওয়া পর ওভার ফ্লো হয়ে প্রচুর জল অপচয় হয়। মিটার বসালে বরাদ্দ জলের থেকে অতিরিক্ত খরচ হলে তা রিডিংয়ে ধরা পড়ে যাবে। এর ফলে পুরসভা বাসিন্দাদের সতর্ক করতে পারবে। সাংবাদিক বৈঠকে আশিসবাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শহরে পানীয় জলের সঙ্কট চলছে। সমাধানে রা‌জ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হ঩য়েছিল। সরকার নয়া পানীয় জল প্রকল্পের জন্য প্রায় ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গত মঙ্গলবার যার টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। ২৩ কিমি দূরের বৈধরা নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল এনে পরিশোধনের পর তা বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হবে। এই প্রকল্প চালু হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পাবেন শহরবাসী। 


    চেয়ারম্যান বলেন, ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা ব্রহ্মাণী নদীর বৈধরা ব্যারেজ থেকে পরিস্রুত জল আসবে রামপুরহাট শহরে। ব্যারেজ লাগোয়া সেচদপ্তরের ৬ একর জায়গায় পাম্পিং স্টেশন করা হবে। ভূগর্ভস্থ জল তুলে সেখানে ছাড়াও আরও দু’টি জায়গায় আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভারে মজুত করা হবে। পরে পরিশোধানের পর তা শহরের ঝনঝনিয়া সাঁকোর কাছে ওভারহেড রিজার্ভারে মজুত করে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হবে। সেই সঙ্গে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের চালধোয়ানি পুকুরের দু’পাড়ে অতিরিক্ত আরও দু’টি ওভারহেড রিজার্ভার নির্মিত হবে। 


    পুরসভা জানিয়েছে, শহরের ১২৮ কিমি জুড়ে পাইপ লাইন হবে। বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার বাড়িতে জলের সংযোগ রয়েছে। এই প্রকল্পে আরও ১৭ হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হবে। তবে জল অপচয় রোধে ফ্লো-মিটার বসানো হবে। মাথাপিছু ১২০ লিটার করে জল দেওয়া হবে। এই প্রকল্প চালু হলে আগামী ২৫ বছর শহরে আর জলকষ্ট থাকবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)