সংবাদদাতা, তেহট্ট: জলঙ্গি নদীতে দেখা মিলল জল ময়ূরের। খুশি এলাকার পরিবেশ কর্মীরা। সেই সঙ্গে আতঙ্কিত এই ভেবে যে, এই জল ময়ূরকে পাখি শিকারিরা মেরে না ফেলে। তাই তাঁরা এই পাখির সংরক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরে তেহট্টের বিভিন্ন জায়গায় জলঙ্গি নদীতে জল ময়ূর দেখা যাচ্ছে। সাধারণত জল ময়ূর বড় বড় পুকুর বা স্রোতহীন জায়গায় দেখা যায়। কিন্তু জলঙ্গি নদীতে এই পাখির দেখা পাওয়ায় অবাক পরিবেশ কর্মীরা। তাঁদের ধারণা, নদীর অবস্থা খুব খারাপ। নদীতে স্রোত নেই।
সেই কারণে এই পাখির দেখা মিলেছে। এই পাখি মূলত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়। এই এলাকায় এর দেখা পাওয়া বেশ আশ্চর্যের। এরা হ্রদ, বিল মিষ্টি জলে বসবাস করে। সাধারণত শীতকালে ঝাঁক বেঁধে থাকে কিন্তু গ্রীষ্মকালে জোড়ায় বা একা থাকে। এখন জলঙ্গি নদীতে যেহেতু প্রচুর কচুরিপানা আছে তাই এদের দেখা মিলছে। কারণ, এরা ভাসমান পাতার উপর হেঁটে হেঁটে জলজ পোকামাকড়, জলজ উদ্ভিদের কচিপাতা, অঙ্কুর ও বীজ খেয়ে জীবনধারণ করে।
এলাকার বাসিন্দা মানস ঘোষ বলেন, আমার শখ ফটো তোলা। নদীতে ছবি তুলতে গিয়ে আমি জল ময়ূর দেখতে পাই। এই প্রথম আমি নদীতে জল ময়ূরের দেখা পেলাম। এলাকার পরিবেশ কর্মী প্রমিত ভট্টাচার্য বলেন, এই পাখি সাধারণত মিষ্টি জলে থাকে। এরা জলে ভাসমান পাতার উপর ডিম পাড়ে। জলঙ্গি নদী যেহেতু এখন কচুরিপানায় ভর্তি, তাই এরা এখানে এসেছে। এদের স্ত্রী পাখি জলপাই বাদামি চকচকে ডিম পেড়ে চলে যায়। সেই ডিম ফুটে যতদিন বাচ্চা না হচ্ছে সমস্ত বিষয় দেখা শোনা করে পুরুষ পাখি। ২৩ থেকে ২৬ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় পুরুষ পাখি। প্রায় দুই মাস বাচ্চাদের দেখাশোনা করে তারা।
এই পাখি দেখতে ময়ূরের মতো আর জলে থাকে বলে এর নাম জল ময়ূর। এরা দেখতে সুন্দর। এদের যদি সংরক্ষণ করা হয় তাহলে এদের বংশ বৃদ্ধি হবে। সেই সঙ্গে এই জায়গা চুপির চরের মতো পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে। তাই আমাদের দাবি, এই বিষয়টি নিয়ে সরকার ভাবনাচিন্তা করুক। আমাদের দাবি, অবিলম্বে এদের এই এলাকায় সংরক্ষণ করা ও কারও দ্বারা যাতে এদের ক্ষতি না হয় তার ব্যবস্থা করা। এই পাখি সাধারণত তিন প্রকারের হয়। নেউ, নেউ পিপি ও মেওয়া নাম হয় তিন প্রজাতির। এর বৈজ্ঞানিক নাম হায়দফাসিয়ানো চিরুরগাস।