• মৎস্যজীবীদের সাড়ে ৪ কোটি টাকার চারা বিনামূল্যে বিলি করবে মৎস্য দপ্তর
    বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বাঁকুড়ায় বিনামূল্যে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মাছের চারা বিলি করবে মৎস্য দপ্তর। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৎস্যজীবী হিসাবে দপ্তরের পোর্টালে নাম নথিভুক্ত আছে এবং কমপক্ষে দু’বিঘা আয়তনের জলাশয় রয়েছে, এমন চাষিদেরই তা বিতরণ করা হবে। সিঙ্গি, দেশি মাগুর এবং দেশি পোনার চারা বিরতণ করা হবে। গোটা জেলায় প্রায় চার হাজার চাষিকে তা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। 


    বাঁকুড়া জেলা মৎস্য দপ্তরের আধিকারিক কিরণলাল দাস বলেন, সরকারিভাবে বিনামূল্যে চারা বিতরণ এবং মাছ ধরার আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম বিতরণের জন্য বাঁকুড়ায় মাছ চাষে আগের চেয়ে উৎসাহ বেড়েছে। এবারে প্রায় চার হাজার চাষিকে বিনামূল্যে মাছের চারা দেওয়া হবে। প্রত্যেক চাষিকে ১২ হাজার চারা দেওয়া হবে। তার জন্য চাষিদের নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হবে। 


    দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিঙ্গি মাছের চারা ৭০ ইউনিট, দেশি মাগুর ৭০ ইউনিট, কম্পোজিট মাছ ৮৮ ইউনিটি এবং চারা পোনা ৩০০০ ইউনিট করে চাষিদের বিতরণ করা হবে। জেলার ২২টি ব্লকেই কোটা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। চাষিরা আবেদন করার পর তা সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে স্ক্রুটিনি হবে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী চারা পাঠানো হবে। জেলা এবং জেলার বাইরে থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী চারা আনা হবে। দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার গ্রামাঞ্চলে প্রচুর ছোট ছোট পুকুর রয়েছে। কিন্তু তাতে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাছ চাষ করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই নিজেদের খাওয়ার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী চাষ করা হয়। অনেকেই আবার ঠিকমতো পরিচর্যাও করেন না। প্রাকৃতিক উপায়ে মাছ খাবার খেয়ে বড়ো হয়। কিন্তু জেলায় এত জলাশয় থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে মাছ আমদানি করতে হয়। সেটা ভেবেইে স্থানীয় চাষিদের মাছ চাষে  উৎসাহ দিতে  রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে মাছের চারা এবং বিভিন্ন প্রকল্পে মাছ ধরার সরঞ্জাম বিতরণ করা হচ্ছে। তাতে চাষিদের মধ্যে মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এতে একদিকে জেলায় মাছের উৎপাদন বাড়ছে, অন্যদিকে মাছ চাষের মাধ্যমে চাষিদের মধ্যে স্বনির্ভরতা বাড়ছে। সেজন্য এবারও সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি চারা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই মতো জেলা থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। 


    দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, মাছ চাষিদের জন্য রাজ্য সরকার নানা প্রকল্প তৈরি করেছে। মৎস্যজীবীদের ক্রেডিট কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। ওই কার্ডের মাধ্যমে তাঁরা মাছ চাষের জন্য লোন পেতে পারেন। সব মিলিয়ে একসময় যে সব জলাশয় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। এখন সেখানেই মাছ চাষ হচ্ছে। বাঁকুড়ায় মাছ চাষের মাধ্যমে বিকল্প আয়ের পথ সুগম হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)