নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ এবং সংবাদদাতা, পতিরাম ও রায়গঞ্জ: গৌড়বঙ্গের বাজারগুলিতে শাক-সব্জির অগ্নিমূল্যের জেরে ক্রেতাদের পকেটে টান পড়েছে। মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে আলু সহ প্রায় সব সব্জির দাম গত কয়েকদিন ধরে উর্দ্ধমুখী। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার পাশাপাশি হঠাৎ দামবৃদ্ধির জন্য কালোবাজারিও অন্যতম কারণ বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। ফলে বেআইনি মজুতদারির বিরুদ্ধে অবিলম্বে পুলিস ও প্রশাসনের নির্দিষ্ট শাখার অভিযান চালানো উচিত বলে বাসিন্দারা মনে করছেন।
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজারে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য প্রত্যেক বিডিও এবং থানার ওসি, আইসিদের নিয়ে ছ’জনের বিশেষ দল গড়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন আমরা জেলাস্তরে হিমঘর মালিক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে বৈঠক করেছি। বেআইনি মজুত বরদাস্ত করা হবে না।
অন্যদিকে, উত্তর দিনাজপুরেও জিনিসপত্রের দাম উর্দ্ধমুখী। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাজারের প্রত্যেক জিনিসের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় পকেটে টান পড়েছে সাধারণ মানুষের। এমন অবস্থায় বাজারগুলিতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে টাস্ক ফোর্সকে হানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রায়গঞ্জের মোহনবাটি বাজার, দেবীনগর বাজার, কলেজপাড়া সহ অন্য বাজারেও জিনিসপত্রের দাম উর্দ্ধমুখী। সেখানে আলু কেজি প্রতি ৩০ টাকা প্রতি, পটল ৩০ টাকা, লঙ্কা ১২০ টাকা, করলা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রায়গঞ্জের বাসিন্দা শুভ্রশঙ্কর নাগ বলেন, বাজার করতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি জিনিসের দাম কতটা বেড়েছে। এভাবে বাড়তে থাকলে সমস্যায় পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করছি বাজারে জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণ হবে। রায়গঞ্জ পুরসভার পুরপ্রশাসক সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, এখনও সরকারি নির্দেশিকা আসেনি। এলেই আমরা বাজারগুলিতে হানা দেব। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
এদিকে, বালুরঘাট শহরে ক্রমশ সব্জির দাম ঊর্ধ্বমুখী। সব সব্জির দামই গত চারদিন ধরে বেড়ে গিয়েছে। পাইকারি বাজারে কাঁচালঙ্কার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি হয়েছে। করলার দাম কেজিতে ৩০ টাকা, পটল ১৫ টাকা, বেগুন ১৫ টাকা, ঝিঙে ১৫ টাকা, মুলো ২০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, পেঁয়াজ ১০ টাকা, আলু ১০ টাকা বেড়েছে।
এবিষয়ে বালুরঘাটের তহবাজারের খুচরো সব্জি বাজারের সহ সভাপতি সুজিত কুন্ডু বলেন, অত্যধিক বৃষ্টি হওয়ায় সব্জির দাম বাড়ছে। পাইকারি দামেই আমরা বিক্রি করছি। তবে খুচরো বাজারে দাম অনেকটা বেড়েছে। দাম বৃদ্ধি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণ করা কেন্দ্রের দায়িত্ব। কেন্দ্রের তরফে কিছুই দেখা হয় না। তবে আমরা টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছি। কোথায় কি দাম বাড়ছে নজর রাখা হচ্ছে।