বয়স্ক ব্যক্তির ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে নাবালক খেলোয়াড়ের মৃত্যুর তদন্ত,ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৪
শুভঙ্কর বসু, কলকাতা: ভিন রাজ্যের জাতীয় স্তরের এক নাবালক ভলিবল খেলোয়াড়ের রহস্যমৃত্যু হয়েছিল এরাজ্যে। আর সেই ঘটনার তদন্তে গুরুতর গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ৩৫ বছরের এক ব্যক্তির ময়নাতদন্তের রিপোর্টকে ভিত্তি করে পুলিস তাদের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তারই জেরে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ মৃত খেলোয়াড়ের পরিবার। ঘটনায় রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
বছর খানেক আগের ঘটনা। গুয়াহাটিতে ৩৭তম ন্যাশনাল জুনিয়র ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের জন্য ছত্তিশগড় থেকে রওনা হয় ছত্তিশগড় সাব জুনিয়র ভলিবল দল। প্রথমে ট্রেনে তাদের হাওড়া, তারপর সেখান থেকে অন্য ট্রেন ধরে গুয়াহাটি যাওয়ার কথা ছিল। সেই মতো ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ ছত্তিশগড় থেকে ট্রেনে চাপে দলটি। যার মধ্যে মামলাকারী মহম্মদ জাভেদের নাবালক ছেলেও ছিল। কোচ ইমরান আলি ও টিম ম্যানেজার হিমাংশু শাহুর তত্ত্বাবধানে দলটি রওনা দেয়। এরপর ২৫ মার্চ ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছয়। মামলাকারীর দাবি, ওইদিন ৯টা বেজে ৪২ মিনিট নাগাদ ছেলের সঙ্গে তাদের শেষবারের মতো কথা হয়। তারপর বহুবার ফোন করলেও সে ফোন ধরেনি বলে অভিযোগ। তারপর কোচ ও ম্যানেজারের তরফে পরিবারকে জানানো হয়, তাদের ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শেষপর্যন্ত তাঁরা জানতে পারেন ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ওইদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ সাঁকরাইলে গঙ্গায় ওই নাবালক খেলোয়াড়ের দেহ ভাসতে দেখেন রিভার ট্রাফিক গার্ডের পুলিস কর্মীরা। তারপর দেহটি বাজে কদমতলা ঘাটে নিয়ে আসা হয়। পরদিন হাওড়া পৌঁছে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দেহ শনাক্ত করে পরিবার।
এরপর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩ ও ৩৬৫ নম্বর ধারায় গোলাবাড়ি থানায় মামলা রুজু হয়। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, এই ঘটনায় দলের কোচ ও ম্যানেজারের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। পুলিসের কাছে এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও ৩০৪ ধারা যুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী আরও দাবি করেন, তদন্তে চরম গাফিলতি করা হচ্ছে। মৃত নাবালক হলেও ঘটনায় ৩৫ বছরের এক ব্যক্তির ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সংযুক্ত করে তদন্ত করছে পুলিস। বিষয়টি শোনার পরই রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি সিনহা। রাজ্যকে প্রশ্ন করলে এব্যাপারে কোনও সদুত্তর মেলেনি। আপাতত এব্যাপারে রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি মামলার আর কোন ক্ষেত্রে গাফিলতি রয়েছে, সে ব্যাপারে মামলাকারীকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। ১ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি।