• ছেলে-মেয়ে খেতে দেয় না, খাবারের খোঁজে পথ হারিয়ে থানায় হাজির বৃদ্ধা
    বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: হাতে লাঠি। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। দৃষ্টিশক্তি অনেকটাই কমেছে। বুধবার সন্ধ্যায় সেই লাঠিতে ভর করেই বনগাঁ থানায় এসে বছর নব্বইয়ের বৃদ্ধা দুলু মণ্ডল পুলিসকর্মীদের কাছে কড়জোরে আবেদন করছিলেন, ‘বাবা আমার, একটু বাড়ি পৌঁছে দাও। অন্ধকারে দিক হারিয়ে ফেলেছি’। রাতে বনগাঁ থানার বড়বাবু অনেক প্রশ্ন করেন বৃদ্ধাকে। বাড়ি কোথায়? ছেলে-মেয়ে কোথায় থাকেন? ছেলের নাম কী? বৃদ্ধা দুলুদেবী নিশ্চুপ। তখন বড়বাবু ও অন্যান্য পুলিস অফিসাররা রাতে থানাতেই বৃদ্ধার খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিতে খোঁজ করা হয় বিভিন্ন থানায়। যোগাযোগ করা হয় হ্যাম রেডিওর সঙ্গেও। শেষে হ্যাম রেডিওর মাধ্যমেই বৃদ্ধার বাড়ির খোঁজ মেলে। জানা গিয়েছে, নগরউখড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের দাসবেড়িয়া গ্রামের চাপরাকান্দার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা দুলু মণ্ডল। অভিযোগ ছেলে-মেয়ে কেউই খেতে দেন না বৃদ্ধাকে। তাই খাবারের খোঁজেই হাঁটতে হাঁটতে পথ হারিয়ে বনগাঁ থানায় চলে এসেছিলেন বৃদ্ধা।


    জানা গিয়েছে, বৃদ্ধার স্বামী মৃত মেঘনাথ মণ্ডল। নাতি নাতনিদের খুবই ভালোবাসেন বৃদ্ধা। কিন্তু কেউই তাঁকে খেতে দেন না। তাই পথে পথে ভিক্ষা করে বেড়ান বৃদ্ধা। বনগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শিবু ঘোষ বলেন, রাতে এভাবে এক বৃদ্ধা থানায় এসে আশ্রয় চাইলে আমরা তো তাড়িয়ে দিতে পারি না। ওঁর কথা শুনে মনে হয়েছে উনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই রাতে বৃদ্ধার থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করি। আর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, এধরনের ঘটনা সমাজের একটা অন্ধকার দিক। আমাদের আবেদন, আপনার সন্তানকে বুকে নিয়ে বাঁচুন। সঠিক শিক্ষা দিন। সন্তানকে সামাজিক কাজেও উৎসাহ দিন। 
  • Link to this news (বর্তমান)